এই পোস্টার ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে পুরনো পদে ফেরানোর দাবিতে রাতের অন্ধকারে বনগাঁ শহরে পোস্টার পড়ল। রবিবার সকালে সুব্রতর ছবি দেওয়া ছাপানো পোস্টারগুলি বনগাঁ শহরে বিজেপির জেলা কর্যালয় সংলগ্ন গান্ধীপল্লি ও বনগাঁ মহকুমা আদালত সংলগ্ন এলাকায় দেখা যায়। বিষয়টি ঘিরে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরে তাঁরা পোস্টারগুলি ছিঁড়ে ফেলেন। এই বিষয়ে বিজেপির বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া বলেন, ‘‘বিরোধীরা চক্রান্ত করে এ কাজ করেছে।’’
এতে অবশ্য বিতর্ক থামছে না। কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না সিপিএম ও তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁরা মনে করছেন এই ঘটনায় বনগাঁয় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল ফের একবার বেআব্রু হয়ে পড়ল।
পোস্টারে সুব্রতবাবুর ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে, ‘সুব্রতদাকে ফেরাও। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি বাঁচাও।’ কোনও পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘বঙ্গ বিজেপির হাল ফেরাতে ১৮টি লোকসভা আসন জয়ের অন্তরালের কারিগর সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে অবিলম্বে ফেরাতে হবে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে রাজ্য বিজেপির সংগঠনের পদে কে বসবে তা নিয়ে পোস্টার কেন পড়ল? রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বনগাঁ বিজেপি এখন দু’ভাবে বিভক্ত। একপক্ষের কর্মসূচিতে অন্যপক্ষকে দেখা যায় না। বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সুসম্পর্ক আছে। কিন্তু বর্তমান সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর সঙ্গে অনেকেরই বনিবনা হচ্ছে না। সে কারণেই এই পোস্টার কাণ্ড ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাস বলেন, ‘‘সুব্রতদা আগে আমাদের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) ছিলেন। এখন রয়েছেন অমিতাভ চক্রবর্তী। এই পদে কে বসবেন তা ঠিক করে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য কমিটি ঠিক করে না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘যারা পোস্টার লাগিয়েছে তারা বিজেপির কেউ নয়। বিরোধীরা নিজেদের কোন্দল ঠেকাতে পোস্টার মেরে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। এতে কোনও লাভ হবে না।’’ বনগাঁ পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘কে বা কারা কারা এই কাজ করেছে তা জানিনা। এটা চক্রান্ত। সুব্রতদা ভাল সংগঠক। বিজেপি বেঁচে আছে। নতুন করে বাঁচানোর কিছু নেই। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল টের পাবে।’’
অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএমের বনগাঁ এরিয়া কমিটির সদস্য পীযূষকান্তি সাহা বলেন, ‘‘বনগাঁয় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এক পক্ষ সভা বা মিছিল করলে অন্য পক্ষ গরহাজির থাকে। পোস্টার পড়ার ঘটনাটি বিজেপির কোন্দলের ফল।’’ তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বিজেপি দলটা গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার। তাঁরা কী ভাবে দল চালাবেন তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। আমরা মানুষের সঙ্গে রয়েছি। এলাকার উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত।’’