পাকা ধানে আগুন। মাথায় হাত চাষির। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বিলির দায়িত্ব তৃণমূলের কোন গোষ্ঠীর হাতে থাকবে, তা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধল দেগঙ্গার হরপুকুর গ্রামে। বোমা-গুলি চলে। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় চাষের জমিতে।
সোমবার রাতে এই ঘটনায় দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। বোমায় তৃণমূল পঞ্চায়েতের এক সদস্যের ভাইয়ের হাত উড়ে যায়। এক কৃষকের প্রায় তিন বিঘা জমির পাকা ধান পুড়ে গিয়েছে। পুলিশ গিয়ে বেশ কয়েকটি তাজা বোমা উদ্ধার করেছে। উভয়পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে সাতজনকে আটক করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ, বুধবার হাদিপুর ঝিকরা ২ পঞ্চায়েতের পক্ষে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসুচি পালিত হওয়ার কথা। তার আগে স্বাস্থ্যসাথীর আবেদনপত্র পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এলাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি চলছিল। হরপুকুর গ্রামের তৃণমূল সদস্য জুম্মান আলি মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষকে সুবিধা করে দিতে কয়েকটি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আবেদনপত্র আমাকে দেওয়া হয়েছিল। একই ভাবে একই এলাকার জন্য তৃণমূলের কয়েকজন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আবেদনপত্র সংগ্রহ করেন। এ দিন দুপুরে উভয়পক্ষ পঞ্চায়েতে গেলে কার আবেদনপত্র গৃহীত হবে, তা নিয়ে বচসা হয়। সন্ধ্যায় দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।’’ জুম্মানের ভাই শুকুর আলি গুরুতর জখম হন। তাঁকে বারাসতের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পঞ্চায়েতের প্রধান সাহাবুদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দা রাজ্জাক মোল্লা কয়েক দিন আগে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তিনি এখন জুম্মানকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় অশান্তি বাধাতে চাইছেন।’’
রাজ্জাকের আবার বক্তব্য, ‘‘দলের পঞ্চায়েত সদস্যকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না প্রধান। আমরা তার প্রতিবাদ করেছিলাম বলে ওরা বোমাবাজি করে। আমাদের এক কৃষক সদস্যের তিন বিঘা ধান পুড়িয়ে দিয়েছে।’’
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘অশান্তি বাধানোর জন্য আমাদের বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত শুরু হয়েছে। সকলকে সাবধান থাকার জন্য বলা হয়েছে।’’
সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শওকত মণ্ডল জানান, ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলাম। ফসল কাটার পরে একটি আমবাগানে রেখেছিলেন। দুষ্কৃতীরা সমস্ত ধান পুড়িয়ে দিয়েছে। ‘‘কী করে ঋণ শোধ করব, ভেবে পাচ্ছি না’’— বলেন শওকত।
দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী সকলের জন্য। গুজব না ছড়িয়ে আবেদন করুন। সকলেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাবেন।’’