cremation

crematorium: নজরদারি ছাড়াই দাহকার্য চলে ক্যানিংয়ের দিঘিরপাড় শ্মশানে

নদিয়ার ঘটনা নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। ধর্ষিতা কিশোরীর দেহ কোনওরকম নজরদারি ছাড়া শ্মশানে নিয়ে গিয়ে কী ভাবে দেহ দাহ করে দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন উঠছে। শুধু নদিয়াতেই নয়, নজরদারিবিহীন এরকম শ্মশান ছড়িয়ে রয়েছে দুই ২৪ পরগনার নানা জায়গাতেই। খোঁজ নিল আনন্দবাজার।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২২ ০৯:২৮
Share:

অনিয়ম: কোনও নথি ছাড়াই শবদাহ চলে এই শ্মশানে। নিজস্ব চিত্র।

শ্মশানে দেহ দাহ করতে লাগছে না চিকিৎসকের শংসাপত্র। কবে, কোন দেহ দাহ হচ্ছে তা নথিভুক্ত রাখার ব্যবস্থা নেই। কে, কখন, কার দেহ নিয়ে দাহ করতে আসছেন, সে ব্যাপারেও নেই কোনও নজরদারি। সোমবার ক্যানিংয়ের ১ নম্বর দিঘিরপাড় পঞ্চায়েত এলাকার এক শ্মশানে গিয়ে চোখে পড়ল এমনই অব্যবস্থার ছবি।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারারা জানান, দিঘিরপাড় এলাকার ওই শ্মশানটি বহু বছরের পুরোনো। এখানে প্রতিদিনই একাধিক দেহ দাহ হয়। সম্প্রতি ক্যানিংয়ে ইলেকট্রিক চুল্লি চালু হলেও এই শ্মশানেই শবদাহ হয় সব থেকে বেশি। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এখানে শবদাহ হলেও, কোনওরকম নিয়ম মানা হয় না বলেই অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রের খবর, আগে খোলা জায়গায় শবদাহ হতো। পরে ব্লক প্রশাসন, পঞ্চায়েতের তরফে শ্মশানে উন্নয়ন করা হয়েছে। ছাউনি বসেছে। চুল্লিটি কংক্রিটের করা হয়েছে। শ্মশানযাত্রীদের বসার জায়গা তৈরি হয়েছে। কিন্তু মৃতদেহের শংসাপত্র যাচাই বা নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রশাসন কোনওরকম পদক্ষেপ করেনি বলেই অভিযোগ। ফলে যে কোনও দিনই এখানে হাঁসখালির ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবার একাধিক শ্মশানেই এরকমই ঢিলেঢালা নজরাদারিতেই দাহ কাজ চলে বলে অভিযোগ।

দিঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা সুনীল দাস বলেন, “ছোট থেকেই দেখে আসছি, এখানে মানুষ দেহ নিয়ে এসে দাহ করে চলে যান। কোথাও কোনও আলাদা নজরদারির ব্যবস্থা নেই। কোনও হিসেব নিকেশও কেউ রাখে না। দাহ করতে কোনও শংসাপত্র লাগে না। কাউকে খুন করে দেহ এনে এখানে পুড়িয়ে দিয়ে গেলেও, কেউ কিছুই বলার নেই।” নদিয়ার ঘটনার পর এই শ্মশানে প্রশাসনের তরফে নজরদারি শুরুর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় বাসিন্দা নির্মল সাহা, রজত দাসরা জানান, আশপাশে যে ভাবে নানা ঘটনা ঘটছে, তাতে স্থানীয় প্রশাসনের উচিত এখানে নজরদারি চালানো। শবদাহ করতে এলে মৃত্যুর শংসাপত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করা হোক। স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান অন্নপূর্ণা কুণ্ডু বলেন, “আমরাও ছোট থেকে এখানে এভাবেই দাহ হতে দেখে আসছি।

Advertisement

পঞ্চায়েতের তরফে শ্মশানের নানা উন্নতি করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের তরফে মৃত্যু শংসাপত্র দেখা বা শবদাহ নথিভুক্ত করার কোনও নির্দেশ আসেনি। সেরকম নির্দেশ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ক্যানিং ১-এর বিডিও শুভঙ্কর দাস বলেন, “ক্যানিংয়ে ইতিমধ্যেই বৈতরণী নামে বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হয়েছে। সেখানে সমস্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখে শবদাহ করা হচ্ছে। তবে দিঘিরপাড়ের শ্মশানটি কীভাবে চলছে জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সোমবার ক্যানিং থানার আইসি আতিবুর রহমান ওই শ্মশানে যান। কী ভাবে এখানে নজরদারি বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement