নেশার টাকা না-পেয়ে নিজের বাড়িতে আগুন লাগালেন গৃহকর্তা! গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
অনেক ছোটাছুটির পর আবাসের তালিকায় নাম তুলেছিলেন স্ত্রী। সরকারি সাহায্যে বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম দফার টাকাও চলে এসেছে। কিন্তু বাড়ির কর্তা চান ওই টাকা দিয়েও নেশা করবেন। মদ খাওয়ার টাকা ছিল না। তাই স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে আবাসের টাকা তোলার জন্য জোরাজুরি করেছিলেন। কিন্তু ঝগড়া, অশান্তি সত্ত্বেও কোনও ভাবে বাড়ি তৈরির টাকা দিতে চাননি স্ত্রী। সেই রাগে ভাঙা বাড়িতে ভাঙচুর চালালেন স্বামী। তার পর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে। অভিযুক্তের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।
ক্যানিং থানার তালদি পূর্ব শিবনগর এলাকার বাসিন্দা লালমণি গাজীর অভিযোগ, স্বামী সওকত গাজী বিশেষ কাজকর্ম করেন না। দিনরাত নেশা করেন এবং তাঁদের উপর অত্যাচার চালান। সংসারের হাল খারাপ। বাড়ির ভগ্নদশা। তাই লালমণি আবাস যোজনায় বাড়ি করবেন বলে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আবাসের তালিকায় নাম উঠেছিল তাঁর। সম্প্রতি আবাস যোজনার ৬০ হাজার টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। সেই খবর পাওয়া মাত্রই টাকা তোলার জন্য জোরাজুরি করছিলেন সওকত। লালমণি বলেন, ‘‘রাতেই টাকা তোলার জন্য উৎপাত শুরু করে। ও সব সময় মদ-জুয়ার আসরে টাকা ওড়ায়। টাকা না-পেলে আমায় মারধর করে। আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আবাস যোজনার টাকা ঢুকেছে। সেটা শোনার পর থেকে টাকা নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল ও। আমি টাকা ছুঁতেই দেব না বলার পর আমায় মারধর করে নিজের বাড়িতে নিজে আগুন লাগিয়ে দেয়।’’
রাতদুপুরে সওকত-লালমণির বাড়িতে আগুন দেখে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তাঁদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এর পর রাতেই স্বামীর বিরুদ্ধে ক্যানিং থানায় অভিযোগ দায়ের করেন লালমণি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। তারা জানিয়েছে, অভিযুক্ত পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে। অন্য দিকে, লালমণি বলেন, ‘‘৩০ বছর বিয়ে হয়েছে। ৩০ বছর ধরে এই সব সহ্য করছি। আর নয়। এ বার পুলিশের কাছে আমার আবেদন, ওকে ধরে নিয়ে যাক।’’