অসচেতন: ফুটবল খেলা দেখতে মানুষের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র
করোনা মোকাবিলায় গত বছর ক্যানিং স্টেডিয়ামে তৈরি হয়েছিল কোভিড হাসপাতাল। করোনা পরিস্থিতিতে জেলা এমনকি জেলার বাইরের বহু রোগীর চিকিৎসা হয় এই হাসপাতালে। এখনও ওই হাসপাতালে নিয়মিত করোনা চিকিৎসা চলছে। এর মধ্যেই ওই স্টেডিয়াম সংলগ্ন মাঠে শুরু হয়েছে ফুটবল প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে প্রচুর ভিড়ও হচ্ছে রোজ। জেলায় দৈনিক সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী। এই পরিস্থিতিতে ফুটবল মাঠে বেলাগাম জনসমাগম নিয়ে বাড়ছে আশঙ্কা। তার উপর করোনা হাসপাতাল লাগোয়া মাঠে হাজার-হাজার মানুষের উপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
গত ২৬ ডিসেম্বর প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। আগামী রবিবার প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। সে দিন আবার বিচিত্রানুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, খেলা-সহ সমগ্র অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্যোক্তা তৃণমূল বিধায়ক পরেশরাম দাস। প্রতিযোগিতার উদ্বোধনের দিন আশেপাশের একাধিক কেন্দ্রের বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও।
স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মদতেই এ ভাবে বিধি ভেঙে প্রতিযোগিতা চলছে। কার্যত ডেকে আনা হচ্ছে সংক্রমণকে। বিধায়ক অবশ্য বিধি ভাঙার কথা মানতে চাননি। পরেশরাম দাস বলেন, “আমরা সবরকম বিধি মেনে প্রতিযোগিতা চালাচ্ছি। খেলা শুরুর আগে দমকলকে দিয়ে গোটা স্টেডিয়াম জীবানুমুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া দর্শকেরা প্রত্যেকে যাতে মাস্ক ব্যবহার করেন, সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।” বিধায়ক জানান, সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে হাসপাতালটিকে মাঠ থেকে পুরোপুরি আলাদা রাখা হয়েছে। ফলে সংক্রমণ ছাড়ানোর কোনও সম্ভাবনা নেই বলে দাবি তাঁর।
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার অপূর্বলাল সরকার জানান, ক্যানিং স্টেডিয়ামের ওই করোনা হাসপাতালে নিয়মিত করোনা চিকিৎসা চলছে। কোনওদিন ২ জন, কোনওদিন ১ জন রোগী ভর্তি থাকছেন। তাঁর কথায়, “প্রতিযোগিতা শুরুর আগে বিধায়ক ও স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকেরা মিলে হাসপাতাল ও মাঠ ঘুরে দেখেছেন। কী ভাবে দু’টিকে আলাদা রাখা যায়, সে ব্যাপারে ওঁরা ব্যবস্থা নিয়েছেন।” কিন্তু এত জনসমাগমে কি সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে না? এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি সুপার।
জনসামগমে সংক্রমণের আশঙ্কা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক আজহার জিয়াও। তাঁর কথায়, “প্রতিযোগিতায় কোভিড বিধি মানার জন্য প্রশাসনের তরফে উদ্যোক্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”