—প্রতীকী চিত্র।
স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর কেটে গেলেও এত দিন গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। সম্প্রতি সেই খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। মঙ্গলবার ভাঙড় ২ ব্লকের বেঁওতা ২ পঞ্চায়েতের হানাখালি গ্রামে অবশেষে বিদ্যুৎ সংযোগ এল।
আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে চারদিকে যদিও এখনও অনুন্নয়নের ছবি। পথঘাট, নলকূপ, বাড়ি বাড়ি শৌচালয়— কিছুই হয়নি। গ্রামের মানুষকে আজও পুকুরের জলের উপরে নির্ভর করতে হয়। গ্রামে সে ভাবে কোনও পাকা রাস্তাই নেই। গ্রামে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থাকলেও নিজস্ব ভবন নেই।বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল ক’দিন ধরেই। এ দিন বেঁওতা ২ পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সাবির আলি-সহ বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা ট্রান্সফর্মারের সুইচ দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করেন। গ্রামে প্রায় ৭০টি পরিবারের বাস। জনসংখ্যা পাঁচশোর বেশি। বিদ্যুৎ আসায় খুশি মানুষজন। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য অনেক আগেই খুঁটি বসানো হয়েছিল। কিছু সমস্যার কারণে এত দিন সংযোগ দেওয়া যায়নি। পঞ্চায়েত প্রধান শেখ সাবির আলি বলেন, “গ্রামের মানুষকে কথা দিয়েছিলাম, পঞ্চায়েত ভোটের পরে গ্রামে বিদ্যুৎ আসবে। সেই কথা রাখতে পেরে খুব ভাল লাগছে। গ্রামের পানীয় জল, রাস্তাঘাট-সহ অন্যান্য সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।”
কিন্তু এত বছর ধরে কেন অবহেলিত গ্রাম? যথারীতি চলছে দায় ঠেলাঠেলি।
ভাঙড়ের সিপিএম নেতা তথা দলের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, ‘‘আসলে মূল হানাখালি গ্রামটি বেঁওতা ১ পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে। আমাদের আমলে ওই গ্রামে প্রভূত উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু আমাদের সরকারের আমলের শেষ দিকে পুকুরাইট বুথে খালপাড়ে, মেছোভেড়ির পাড়ে মৎস্যজীবী পরিবারের অনেক আত্মীয় উঠে গিয়ে বসতি গড়ে তোলেন। তৃণমূলের আমলে ওই এলাকায় কোনও কাজ হয়নি।’’
আইএসএফের ভাঙড় ২ ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য রাইনুর হক বলেন, ‘‘তৃণমূল এত দিন হল ক্ষমতায় এসেছে। তারপরেও ওরা হানাখালি গ্রামের জন্য কিছু করেনি। আমাদের বিধায়ক মাত্র দু’বছর ক্ষমতায় এসেছেন। অবশ্যই ওই এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করবেন।’’
তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের কথায়, ‘‘বাম আমলে ওই এলাকায় কোনও কাজ হয়নি। আমাদের সরকারের আমলে হানাখালি গ্রামে ৭টি গভীর নলকূপ, সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিয়ে একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করে দিয়েছি। শুধু একটা পাড়ায় বিদ্যুতের সমস্যা ছিল। সেটা সম্পন্ন হয়েছে।’’