সুইটি ইসমাইল শেখ
প্রায় ১৫ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে ভারতে চলে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার দেবী পক্ষের সূচনায় ১৯ বছর বয়সি ওই তরুণীকে উত্তর ২৪ পরগনার বেনাপোল সীমান্ত হয়ে তাঁর বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হল। সৌজন্য হ্যাম রেডিয়ো। সুইটি ইসমাইল শেখ নামে ওই তরুণী নারায়ণগঞ্জ উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্গত উত্তর মাসদাইর এলাকার বাসিন্দা।
বাংলাদেশে এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম সুইটির। তাঁর বয়স যখন চার, সেই সময় কিছু দুষ্কৃতী তাঁকে পাচার করে ভারতে নিয়ে আসে। পরে অবশ্য দুষ্কৃতীদের হাত থেকে কোনও মতে পালিয়ে বেঁচেছিলেন তিনি। কিন্তু দিনের পর দিন তাঁকে ঘুরে বেড়াতে হয়েছে ভারতের অচেনা রাস্তায়। বিনিদ্র রাত কেটেছে স্টেশনে, বাসস্টপে। এ ভাবেই কয়েক বছর মুম্বই শহরে কাটিয়েছিলেন সুইটি।
এক সময় সেখানকার পুলিশ সুইটিকে উদ্ধার করে। বাংলায় কথা বলতে থাকায় পরে তাঁকে চাইল্ড লাইনের মাধ্যমে কলকাতায় পাঠানো হয়। আট বছর আগে সেখান থেকে পাথরপ্রতিমার দিগম্বরপুরের অঙ্গীকার হোমে পাঠানো হয় তাঁকে। পরে হোম কর্তৃপক্ষকে সুইটি জানান, তিনি বাংলাদেশের বাসিন্দা। পরে চাইল্ড লাইন ও পুলিশের মাধ্যমে খবর দেওয়া হয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘হ্যাম রেডিয়ো’কে।
তার পরই হ্যাম রেডিয়োর সদস্যরা ‘অ্যামেচার রেডিয়ো সোসাইটি অব বাংলাদেশ’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে ধীরে ধীরে সুইটির পরিচয় জানতে পারেন। যোগাযোগ করা হয় সুইটির দিদি ও জামাইবাবুর সঙ্গে। ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে সুইটির সঙ্গে কথাও বলানো হয়। তাঁকে দ্রুত বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরও দ্বারস্থ হয়েছে হ্যাম রেডিয়ো। এর পর সরকারি ছাড়পত্র মিলতেই বৃহস্পতিবার তাঁকে বেনাপোল সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে দিদি ও জামাইবাবুর কাছে পৌঁছে দেওয়া হল।
১৫ বছর আগের হারিয়ে যাওয়া ছোট্ট বোনকে কাছে পেয়ে কান্না থামাতে পারেননি সুইটির দিদি। হ্যাম রেডিয়োর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বলেন, ‘‘তরুণীকে পরিবারের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে পেরে ভীষণ খুশি। তাঁকে ফেরাতে বাংলাদেশ হাই কমিশন দ্রুত পদক্ষেপ করেছে।’’