হুমকি পেয়েও গুরুত্ব দেননি ব্যবসায়ী

নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে বসিরহাটের ব্যবসায়ীদের।

Advertisement

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:২৭
Share:

নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে বসিরহাটের ব্যবসায়ীদের।

Advertisement

শনিবার সন্ধ্যায় ব্যবসায়ী কন্যা খাদিজাকে অপহরণের ঘটনায় যা রীতিমতো ভাবাচ্ছে তাঁদের। খাদিজা শুধু বর্ধিষ্ণু ব্যবসায়ী আবদুল হাই সিদ্দিকের (লাল্টু) মেয়েই নয়, তার মা সুরাইয়া তৃণমূলের কাউন্সিলরও বটে। লাল্টুও তৃণমূল নেতা। এমন এক পরিবারের মেয়েকে বিকেলে গজালমারি গ্রামের আত্মীয়ের বাড়ির উঠোন থেকে এক বাড়ি থেকে অপহরণ করেছে দুষ্কৃতীরা।

লাল্টুর বাড়ি নলকোড়ায়। তাঁর ইটভাটার ব্যবসা। ভোলা দাস নামে যে দুষ্কৃতী তোলা চেয়ে তাঁকে জেলে বসে ফোন করছিল বলে তাঁর দাবি, তার নামে শুনে ভয়ে কাঁপেন ব্যবসায়ীরা। একাধিক খুন-জখম, তোলা আদায় ছাড়াও নানা দুষ্কর্মের ঘটনায় বিভিন্ন সময়ে জড়়িয়েছে ভোলার নাম।

Advertisement

ভোলাকে নিয়ে মুখ না খুললেও তোলাবাজদের দৌরাত্ম্য যে দিন দিন বাড়ছে, তা মানছেন বসিরহাট শহরের ব্যবসায়ীরা। দিন কয়েক আগেই টাউনহল এলাকায় তিনটি দোকানে তোলা চেয়ে তাণ্ডব চালায় তিন দুষ্কৃতী। একটি লটারির টিকিটের দোকানে হামলা চালানোর সময়ে একজনকে ধরে ফেলেন স্থানীয় মানুষ। ঘনশ্যাম দাস ওরফে তনয় নামে ওই যুবককে গণপিটুনি দিয়ে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। পরে গ্রেফতার হয় সঞ্জয় দাস ওরফে জগা নামে বসিরহাট আদালতের এক ল’ক্লার্ক। কিছু দিন আগেই আদালতের নথি জাল করার অভিযোগেও গ্রেফতার হয়েছিল সে। তোলাবাজির ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বুদ্ধদেব দাস এখনও অধরা।

ব্যবসায়ীদের অনেকেরই বক্তব্য, মাঝে মধ্যেই হুমকি দিয়ে টাকা চাওয়া হচ্ছে। না পেলে বড় ক্ষতি করে দেওয়ার কথা বলে শাসাচ্ছে তোলাবাজেরা। সব সময়ে সে সব অভিযোগ পুলিশের কাছেও জানাতে সাহস পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

এ দিকে, খাদিজাকে অপহরণের ঘটনা নিয়ে বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘‘অত্যন্ত নক্কারজনক ঘটনা। আমরা লাল্টুর পাশে সব রকম ভাবে আছি। পুলিশকে বলা হয়েছে, যে ভাবে হোক খুঁজে বের করতেই হবে ওর মেয়েকে। প্রশাসনের সব স্তর তো বটেই, দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও ঘটনার কথা জানানো হয়েছে।’’

লাল্টু বলেন, ‘‘৫ লক্ষ টাকা তোলা চেয়ে বার কয়েক হুমকি ফোন এলেও আমি গুরুত্ব দিইনি। উল্টে ভোলাকে ফোনেই বলি, আমাদের দলের পক্ষ থেকে বলা আছে, এ ভাবে কেউ টাকা চাইলে এক পয়সাও দেবে না। ও যে আমার এত বড় বিপদ ঘটিয়ে ছাড়বে যাবে, তা ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি।’’ রাত পর্যন্ত অবশ্য মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসেনি বলেই দাবি পরিবারের।

মেয়েটিকে খুঁজে বের করার জন্য সমস্ত থানাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তদন্ত এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ র্কতারা। যে ফোন নম্বর থেকে লাল্টুর কাছে তিন বার হুমকি ফোন এসেছিল, সেটির সূত্রেও তদন্ত এগোনো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement