ফাইল চিত্র
গোবরডাঙা পুর এলাকায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ জন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় করোনা পজ়িটিভ সংক্রমণ ঠেকাতে রাজ্য সরকারের লকডাউন ছাড়াও প্রতি রবিবার পুরসভা এলাকায় লকডাউন পালন করা হবে। ওষুধ ছাড়া সমস্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে। পাড়ায় ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে আনাজ-মাছ বিক্রিও রবিবার বন্ধ থাকবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘বেআইনি মজুত, কালোবাজারি, প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত মালপত্র কেনা এবং গুজবের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
এ দিকে, স্থানীয় ভাবে ৮ দিনের এবং সরকারি এক দিনের লকডাউন উঠতেই শুক্রবার সকাল থেকে মানুষের ভিড় উপচে পড়েছে হাবড়া, অশোকনগর এবং গোবরডাঙা থানা এলাকায়।
যানবাহনের ঠেলায় হাব়ড়ায় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। শারীরিক দূরত্ব বিধি ছিল না। বাইকে, সাইকেলে মাস্ক ঝুলিয়ে মানুষ ঘুরে বেরিয়েছেন। বাজারের মধ্যে ক্রেতা-বিক্রেতারা কেউ মাস্ক পরেননি। বাইকে তিনজন, অটো, টোটো, ট্রেকার, ভ্যান অতিরিক্ত যাত্রী নিয়েই চলাচল করে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমাতে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত পূর্ণ লকডাউন করা হয়েছিল হাবড়া অশোকনগর এবং গোবরডাঙা থানা এলাকায়। ব্যবসায়ী সংগঠন, পুরসভা, পুলিশ-প্রশাসন আলোচনা করে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। স্থানীয় ভাবে ডাকা ৮ দিনের লকডাউন এবং সরকারি ভাবে বৃহস্পতিবারের লকডাউনের পরে শুক্রবারই খুলেছে বাজার, দোকান।
লকডাউনের দিনগুলিতে রাস্তাঘাট, বাজার, সড়ক ছিল জনশূন্য। দোকান সব বন্ধ ছিল। আপৎকালীন পরিস্থিতি ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বেরোননি। পুলিশের নজরদারি এবং ধরপাকড় ছিল।
হাবড়া পুরসভা এলাকায় বৃহস্পতিবার একদিনে ১২ জন মানুষ করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাবড়া পুরসভার পুরপ্রশাসক নীলিমেশ দাস। পরিযায়ী শ্রমিকদের হাত ধরে প্রথমে করোনার প্রকোপ ছড়িয়েছিল। তারপর কলকাতা যোগাযোগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মানুষ। এখন স্থানীয় ভাবে করোনা ছড়াচ্ছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত হাবড়া শহরে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪ জন। মারা গিয়েছেন ৪ জন। ৮ দিনের স্থানীয় লকডাউনের মধ্যেও মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। নীলিমেশ বলেন, ‘‘লকডাউনের সুফল বুঝতে আমাদের আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে। স্থানীয় ভাবে করোনা বাড়ছে। বাণীপুর এলাকায় ৫০ শয্যার একটি সেফ হাউস তৈরি করা হচ্ছে।’’
অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা এলাকায় সরকারি ভাবে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৯ জন। বেসরকারি ভাবে ৮৫ জন। এখানে মারা গিয়েছেন ২ জন। শুক্রবার এলাকার বাজারগুলিতে ভিড় হয়েছিল। স্থানীয় গোলবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গুপি মজুমদার বলেন, ‘‘বার বার অনুরোধ করা সত্বেও মাছের আড়তগুলিতে ভিড় বন্ধ করা যায়নি।’’ পুরসভার পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘মানুষ অনেকটাই সচেতন হয়েছেন। বেশির ভাগ মানুষই মাস্ক ব্যবহার করছেন। করোনায় আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা মানুষেরা বাড়িতেই থাকছেন। কয়েক দিন আগেও তাঁদের বাড়ি রাখা
যাচ্ছিল না।’’