তৎপরতা: রাস্তায় বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। নিজস্ব চিত্র
নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে গোবরডাঙায় অলিগলি-সহ গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও বাজার এলাকায় বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা।
বুধবার থেকে গোবরডাঙা পুরসভার তরফে এই কাজ জোরকদমে শুরু হয়েছে। পুরপ্রধান কাউন্সিলর তথা গোবরডাঙা শহর তৃণমূল সভাপতি শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘প্রায় ১০৩টি ক্যামেরা গোটা শহর জুড়ে বসানোর কাজ চলছে। এর ফলে শহরে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বন্ধ হবে। শহরবাসী নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারবেন। শীঘ্রই ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হবে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যামেরার ফুটেজ দেখার জন্য গোবরডাঙা থানায় ২৪ ঘণ্টা একটি কন্ট্রোল রুম থাকছে। সেখানে পুলিশ কর্মীরা সর্বক্ষণ মনিটরে নজর রাখবেন। কোথাও অপ্রীতিকর কিছু চোখে পড়লে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে।
উত্তর ২৪ পরগনার সব থেকে পুরনো পুরসভা গোবরডাঙা। ১৮৭০ সালে তৈরি হয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর এলাকার মোট আয়তন প্রায় ১৪ বর্গ কিলোমিটার। ওয়ার্ড সংখ্যা ১৭টি। জনসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন গোবরডাঙার মানুষের দীর্ঘ দিনের চাহিদা ছিল পূর্ণাঙ্গ একটি থানার। শহরবাসীর দাবি মেনে জানুয়ারি মাসে হাবড়া থানা ভেঙে গোবরডাঙা থানা তৈরি হয়েছে।
শহরবাসী জানিয়েছেন, এখন শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অতীতের তুলনায় ভাল। তবে ইদানীং দুষ্কৃতীদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। দিন কয়েক আগে খাটুরা বটতলা এলাকায় দুষ্কৃতীরা বাইকে করে এসে এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। যদিও গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে আতঙ্ক ছড়ায় শহরবাসীর মধ্যে। এরপরেই সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজে আরও গতি এনেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি চুরির ঘটনাও ঘটেছে কয়েকটি।
গোবরডাঙা শহরকে বলা হয়, ‘নাটকের শহর।’ এখানে প্রচুর নাটকের দল আছে। নাট্যশিল্পীরা বাইরে নাটক করে গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন। তাঁরাও জানিয়েছেন, এ বার সিসি ক্যামেরা বসানোর ফলে তাঁরা রাতে যাতায়াত করতে নিশ্চিন্ত বোধ করছেন। পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহররের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা কালীবাড়ি মোড়, স্টেশন রোড, জামদানি মোড়, গৈপুর চৌমাথা, শ্মশানঘাট, সাহাপুর মোড়, সরকার পাড়া, গড়পাড়া মোড়, খাটুরা বাজার-সহ শহরের বেশির ভাগ এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে। শহরে ঢোকা-বেরোনোর প্রতিটি মোড়ে সিসি ক্যামেরা বসছে। অনেক সময়ে কোনও অপরাধমূলক ঘটনার খবর পাওয়ার পরে পুলিশ যেতে যেতে অপরাধীরা পালিয়ে যায়। তাদের খুঁজে বের করতে কাঠখড় পোড়াতে হয়। এখন আর সেই সমস্যা থাকবে না বলে পুলিশের মত। ক্যামেরা বসানোয় অপরাধও কমবে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তারা।