দুরবস্থা: রাস্তার পাশে ডাঁই হয়ে পড়ে জঞ্জাল। পাশ দিয়েই যাতায়াত স্থানীয় বাসিন্দাদের। বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
ভাগাড় সরানোর দাবিতে তার সামনে ধর্নায় বসেছেন এলাকার বাসিন্দারা। আর তার ফলে সেখানে আবর্জনা ফেলতে না পারায় বারাসত শহরের যত্রতত্র জমছে জঞ্জাল। অভিযোগ, পুরসভার গাড়িও যেখানে সেখানে জঞ্জাল ফেলে রাখছে। ফলে দুর্গন্ধে মাস্কে রুমাল চাপা দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে পথচারীদের। শুক্রবার পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ের পরেও এ নিয়ে অচলাবস্থা কাটেনি। তবে পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
কদম্বগাছি পঞ্চায়েত এলাকার কুবেরপুর-পিরগাছিতে কয়েক বছর আগে জমি কিনে আবর্জনা ফেলতে শুরু করেছিল বারাসত পুরসভা। কিন্তু বছর দুয়েক আগে এর বিরুদ্ধে এলাকার চাষিরা আন্দোলন শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, ওই ভাগাড়ের জঞ্জাল পচে তার বিষাক্ত জলে আশপাশের ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, উর্বরতা হারাচ্ছে চাষের জমি। সেই সঙ্গে এলাকার পরিবেশও দূষিত হচ্ছে এবং রোগ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা, ক্ষতিগ্রস্ত চাষি এবং পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করেছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পুরসভার তরফে আশ্বাস দেওয়া হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। মাস দুয়েক আগে আন্দোলন শুরু করেন এলাকার চাষিরা। সম্প্রতি ভাগাড়ের সামনে ধর্নাও দিতে শুরু করেন তাঁরা। এমনকি জঞ্জালের গাড়ি ঢুকতে বাধা দেন। ফলে টানা চার দিন ধরে সেখানে শহরের জঞ্জাল ফেলা যায়নি।
এই অচলাবস্থা কাটাতে সেই সময় পুর কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেন, চাষিদের থেকে ন্যায্য মূল্যে জমি কিনে পাশে আরও একটি ভাগাড় তৈরি করা হবে। অভিযোগ, জমি কেনা হলেও সেই ভাগাড়ের কাজ এখনও শুরু হয়নি। ফলে সেই পুরনো ভাগাড়েই এখনও আবর্জনা ফেলার কাজ হয়ে চলেছে। পাঁচ দিন আগে ভাগাড় সরানোর দাবিতে ফের আন্দোলন শুরু করেন এলাকাবাসীরা। সেই ভাগাড়ে ঢোকার রাস্তা বাঁশ দিয়েও আটকে দেওয়া হয়। ফলে গত চার দিন ধরে কোনও জঞ্জাল ফেলার গাড়ি ওই এলাকায় ঢুকতে পারছে না। পুরসভার সাফাইকর্মীরাও রাস্তা থেকে জঞ্জাল তুলছেন না বলে অভিযোগ। ফলে আবর্জনায় ভরেছে বারাসত।
বারাসত পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জেলাশাসক থেকে শুরু করে প্রশাসনের সব স্তরে সমস্যার কথা জানানো হবে। বাসিন্দাদের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। ফের আলোচনা হবে। একটা বিকল্প ব্যবস্থার কথাও আমরা ভেবেছি। আশা করছি অচিরেই সমস্যা মিটবে।” তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সমস্যা না মিটলে তাঁরা আর ওই ভাগাড়ে জঞ্জাল ফেলতে দেবেন না। তবে এই অবস্থা চলতে থাকলে পুর নাগরিকদের ক্ষোভ বাড়বে বলেই মনে করছে পুরসভা।