Sandeshkhali Incident

সন্দেশখালির আন্দোলনে দলীয় ঝান্ডা নয়: নিরাপদ

সন্দেশখালিতে আন্দোলন তীব্র হতেই, ঝুপখালি, ধামাখালির মতো অনেক জায়গায় এখন লাল ঝান্ডা উড়িয়েছেন সিপিএম কর্মীরা। খুলেছেন সাত বছর ধরে বন্ধ দলীয় কার্যালয়ও।

Advertisement

রাজীব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৪ ০৯:১৫
Share:

প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দার

Advertisement

সন্দেশখালির মহিলারা লাঠি-ঝাঁটা হাতে শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে পথে নামতেই 'সন্দেশখালি অভিযানের' হিড়িক পড়ে রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপি, কংগ্রেসের মতো দলীয় ঝান্ডা নিয়ে সন্দেশখালিতে দাঁড়িয়ে সভা করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও। আন্দোলন শুরু হওয়ার পরে সন্দেশখালির এমন বহু জায়গায় সিপিএম কর্মীরা দলের ঝান্ডা উড়িয়েছেন, যেখানে দু’মাস আগেও দলের কার্যত কোনও অস্তিত্বই ছিল না। এই আবহে সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দার মনে করছেন, আন্দোলনে দলীয় ঝান্ডার ব্যবহার মোটেও কাম্য নয়।

নিরাপদর কথায়, ‘‘দলীয় ঝান্ডার অনুপ্রবেশ ঘটলে আন্দোলন বিভাজিত হবে। আন্দোলন থেকে সরে যাবেন অনেক মহিলা।" তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, "আমরা যে কাজ ১৩ বছরে করতে পারিনি, তা করে দেখিয়েছেন গরিব, তফসিলি জাতি-জনজাতির মহিলারা। স্বতঃস্ফূর্ত এই আন্দোলনে রাজনীতির রং না লাগাই ভাল।’’ সন্দেশখালিতে অশান্তির ঘটনায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগের পুলিশ নিরাপদকে গ্রেফতার করেছিল। ১৩ দিন বসিরহাট জেলে কাটাতে হয় তাঁকে। গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁকে ২৭ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। পরে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সন্দেশখালি গিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

সন্দেশখালিতে আন্দোলন তীব্র হতেই, ঝুপখালি, ধামাখালির মতো অনেক জায়গায় এখন লাল ঝান্ডা উড়িয়েছেন সিপিএম কর্মীরা। খুলেছেন সাত বছর ধরে বন্ধ দলীয় কার্যালয়ও। এই কাজ কি তাঁর ঝান্ডা ছাড়া আন্দোলন-তত্ত্বের পরিপন্থী নয়? নিরাপদের বক্তব্য, "ওগুলি বামেদের নিজস্ব কর্মসূচি ছিল। তাই সেখানে দলের ঝান্ডা ব্যবহার করা হয়েছে। সন্দেশখালির মহিলাদের আন্দোলনের কথা সিপিএম বলবে তার নিজস্ব সভা-সমাবেশে। কিন্তু কখনই আন্দোলনকারীদের হাতে লাল ঝান্ডা তুলে দেবে না।" তিনি জানান, সন্দেশখালির প্রতি মুহূর্তের খবর আসছে তাঁর কাছে। কয়েক দিনের মধ্যে তিনি সন্দেশখালি যেতে পারেন। তবে সিপিএম নেতা পরিচয়ে নয়, যাবেন সাধারণ নাগরিক হিসেবে।

দল বেঁধে সন্দেশখালি গিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মিছিলে ’জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শোনা গিয়েছে। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে বলতে শোনা গিয়েছে, সন্দেশখালিতে নির্যাতিতারা একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের।

নিরাপদ মনে করেন, "এই মন্তব্য আন্দোলনের ক্ষতি করছে। আন্দোলনকারীদের অনেকের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়েছে। বিজেপি সাম্প্রদায়িক প্রচার চালিয়ে আন্দোলনকে দুর্বল করতে চাইছে। আমি সতর্ক করেছি আন্দোলনকারীদের।"

বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়ালের দাবি, ‘‘বিরোধী দলনেতা আসায় আন্দোলনকারীরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়েছিলেন। আমরা কাউকেই দলীয় পতাকা ধরতে বাধ্য করিনি। ওখানে সিপিএম নেই। আছি আমরা। সিপিএম চাইছে আমাদের পতাকা যাতে না ওড়ে।’’

সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর অভিযোগ, ‘‘সিপিএম, বিজেপি ধারাবাহিক ভাবে মহিলাদের উস্কানি দিয়ে আমাদের কর্মীদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করাচ্ছে। দলীয় ঝান্ডা ব্যবহার করলে ওদের অপকর্ম প্রকাশ্যে চলে আসবে। তাই ঝান্ডা ছাড়া এই কাজ করছে।" তাঁর দাবি, ‘‘আন্দোলনে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মানুষ বুঝে গিয়েছেন, বিরোধীরা তাঁদের বিপথে পরিচালিত করছিল। আমাদের দল ও প্রশাসন সক্রিয় হওয়ায় ক্ষোভ যেটুকু ছিল, তা প্রশমিত হয়েছে।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement