প্রধানের সই জাল করে এমন ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি করার অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
জাল নথিপত্র বানিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় কৃষক বন্ধু প্রকল্পের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল স্থানীয় কয়েক জনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নুরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের সই জাল করে মৃত ব্যক্তির জাল ডেথ সার্টিফিকেট বার করা হয় বলে অভিযোগ। প্রতিটি জাল ডেথ সার্টিফিকেট দেখিয়ে তোলা হয় দু’লক্ষ করে টাকা।
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার এই অভিযোগ ঘিরে দেগঙ্গায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি-র অভিযোগ নুরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উমা দাসই চক্রান্ত করে জাল নথিপত্র বানাচ্ছেন এবং মানুষের থেকে কাটমানি নিচ্ছেন। বিজেপি নেতা তরুণকান্তি ঘোষের অভিযোগ, ‘‘প্রধানের সই দেখিয়ে জাল ডেথ সার্টিফিকেট বার করার ঘটনা সামনে আসায় এখন অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে।’’
যদিও বিজেপি-র অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসক শিবির। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান উমার পাল্টা অভিযোগ, এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা জড়িত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নুরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বসনা বেনাপুরের বাসিন্দা ইব্রাহিম মণ্ডল এক বছর আগে মারা গিয়েছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৭০ বছর। কিন্তু জাল ডেথ সার্টিফিকেট বানিয়ে, ‘৬০ বছর বয়স’ লিখে তাঁর ছেলেরা দু’লক্ষ টাকা হাতিয়েছে বলে অভিযোগ। ওই এলাকার বাসিন্দা মাহেবুর গোলদার প্রায় ১৫ বছর আগে মারা গিয়েছেন। কিন্তু নুরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের সই জাল করে ডেট সার্টিফিকেট বার করে দু’লক্ষ টাকা হাতিয়েছে তাঁর পরিবার। এই ঘটনার পিছনে বড় একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে মনে করছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের পদাধিকারীরা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, ২০১৯ সালের পরে ৬০ বছর বা তার কম বয়সি কোনও কৃষকের মৃত্যু হলে তাঁর পরিবার কৃষক বন্ধু প্রকল্পে দু’লক্ষ টাকা করে পাবেন। আর এই প্রকল্পে জাল নথিপত্র বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে নুরনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ১৬ জন বাসিন্দার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান, দেগঙ্গার বিডিও এবং দেগঙ্গা কৃষি দফতরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সহকারী কৃষি অধিকর্তা গৌতম সামুই বলেছেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’