হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৎস্যজীবী পঞ্চানন ভক্তা। —নিজস্ব চিত্র।
সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে বাঘের সঙ্গে রুদ্ধশ্বাস লড়াই করে প্রাণে বেঁচে ফিরলেন এক মৎস্যজীবী। যদিও শনিবার বন দফতরের রামগঙ্গা রেঞ্জের অধীন বিজয়াড়া জঙ্গলে বাঘে-মানুষে এই লড়াইতে জখম হয়েছেন তিনি। তবে মৎস্যজীবীর সঙ্গীরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই মৎস্যজীবী।
বন দফতর সূত্রে খবর, পাথরপ্রতিমার পশ্চিম দ্বারিকাপুরের বাসিন্দা ওই মৎস্যজীবীর নাম পঞ্চানন ভক্তা। শনিবার বিকেলে তিনি স্ত্রী এবং আট জন প্রতিবেশীকে নিয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। পাথরপ্রতিমার জি-প্লট থেকে জগদ্দল নদী পেরিয়ে ঠাকুরান নদীতে ঢুকে পড়েন তাঁরা। সুন্দরবনের চুলকাঠি জঙ্গলের বিজিয়াড়া চরের কাছে কাঁকড়া ধরছিলেন তাঁরা।
মৎস্যজীবীদের দাবি, সে সময় জঙ্গল থেকে একটি বাঘ বেরিয়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে বছর পঞ্চাশের পঞ্চাননের উপর। পঞ্চাননের চিৎকারে ছুটে আসেন তাঁর সঙ্গীরা। বাঘটিকে লাঠি ও নৌকার বৈঠা নিয়ে মারতে থাকেন তাঁরা। বেশ কয়েক মিনিট বাঘে-মানুষে রুদ্ধশ্বাস লড়াই চলার পর শিকার ছেড়ে পালিয়ে যায় দক্ষিণরায়। কিন্তু তার আগে বাঘের থাবায় পঞ্চাননের মাথা ফুটো হয়ে গিয়েছে। ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝরতে শুরু করে।
পঞ্চাননের সঙ্গীরাই তাঁকে গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। এর পর পাথরপ্রতিমা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় জখম পঞ্চাননকে। পরে তাঁকে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়।
বাঘের হামলার ঘটনাটি ইতিমধ্যেই বন দফতরকে জানিয়েছেন আক্রান্ত মৎস্যজীবীর পরিবার। বন বিভাগের রামগঙ্গার রেঞ্জার অসীম দণ্ডপাত বলেন, ‘‘ওই মৎস্যজীবীকে আদৌ বাঘে হামলা করেছিল কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, ওই এলাকায় মাছ ধরার জন্য মৎস্যজীবীদের কাছে লিখিত অনুমতিপত্র ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’