প্রতীকী ছবি।
ঘাড়ে থাবা বসিয়ে মৎস্যজীবীকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যেতে চেয়েছিল বাঘ। সঙ্গীরা রুখে দাঁড়িয়ে বাঘের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনেন তাঁকে। তবে শেষরক্ষা হল না। রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে শশাঙ্ক মণ্ডল (৪০) নামে ওই মৎস্যজীবীর। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের ঝিলা ৬ নম্বর জঙ্গলে।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সুন্দরবন কোস্টাল থানার লাহিড়িপুরের বাসিন্দা শশাঙ্ক গত বুধবার চার সঙ্গীকে নিয়ে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ জঙ্গলের পাড়ে নেমে কাঁকড়া ধরছিলেন শশাঙ্ক। তখন একটি বাঘ পিছন থেকে তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শশাঙ্কের ঘাড়ে থাবা বসিয়ে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সঙ্গীরা বৈঠা, লোহার শিক নিয়ে বাঘের উপরে চড়াও হন। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে বাঘে-মানুষে লড়াই। অবশেষে শশাঙ্ককে ছেড়ে দিয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যায় বাঘ। সঙ্গীরা তড়িঘড়ি রক্তাক্ত শশাঙ্ককে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেন। কিন্তু পথেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যু হয় তাঁর। শশাঙ্কর সঙ্গী বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, “দু’দিন আগে আমরা মাছ, কাঁকড়া ধরতে বেরিয়েছিলাম। পূর্ণিমার কটাল, তাই বেশ ভালই কাঁকড়া মিলছিল। জঙ্গলের পাড়ে নেমে কাঁকড়া ধরার সময়ে শশাঙ্কের উপরে বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমরা বাঘের সঙ্গে লড়াই করে ওঁকে উদ্ধার করলেও বাঁচাতে পারলাম না।” বন দফতরের দাবি, বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও বেশি কাঁকড়ার লোভে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মৎস্যজীবীরা জঙ্গলের পাড়ে নামছেন। আর তাতেই বিপদ ঘটছে। এ দিনও একই ভাবে বাঘের হামলার মুখে পড়েছেন ওই মৎস্যজীবী। গত সাত মাসে অন্তত চোদ্দোজন মৎস্যজীবীর মৃত্যু হল বাঘের হামলায়। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা তাপস দাস বলেন, “মৎস্যজীবীদের দলটি বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। কী ঘটেছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।”
অন্য দিকে, কুলতলির দেউলবাড়ি দেবীপুর পঞ্চায়েতের জজেরহাটের বাসিন্দা তাপস মণ্ডলও এ দিন মাছ ধরতে গিয়ে কলস দ্বীপের কাছে বাঘের আক্রমণের মুখে পড়েন। তবে সঙ্গীরা পাল্টা লড়াই করে জীবিত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন। পরে আহত তাপসকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।