প্রতি বছর শীতেই সুন্দরবনের নদী, সাগরের তীরে উড়ে আসে পরিযায়ী পাখির দল। ছবি: সুগত সাহা।
চোরাগাজি খালের ধারে কোন গাছে দেখা মেলে ‘বাফি ফিশ আউল’ নামে বিরল পেঁচার? শীত পড়লেই লোথিয়ান অভয়ারণ্যের কোন চরে ইউরোপ আর উত্তর এশিয়া থেকে উড়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে লাল ঠোঁটের হাঁস ‘কমন শেলডাক’? মাতলা নদীর কোন চরে বাসা বাঁধে বিপন্নপ্রায় প্রজাতির সাদা কাস্তেচরা (ব্ল্যাক হেডেড আইবিস)? পাখিপ্রেমীদের সেই চর্চার সুযোগ দিতে এগিয়ে এল রাজ্য বন দফতর এবং সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এ বারই প্রথম দেশের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে আয়োজন করা হয়েছে পাখি উৎসবের।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা (ফিল্ড ডিরেক্টর) অজয় দাস বুধবার বলেন, ‘‘আগামী ৭ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এবং লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিভাগীয় বনাঞ্চলে হবে এই বার্ড ফেস্টিভ্যাল। মোট ২৪ জন পাখিপ্রেমীকে এতে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, সুন্দরবন ব্যাঘ্রপ্রকল্পের ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট লিঙ্কে গিয়ে পাখি উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য আবেদন জানানো যাবে। তিনি বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের বক্সা ব্যাঘ্রপ্রকল্প এবং মহানন্দা অভয়ারণ্যে এমন পাখি উৎসবের আয়োজন হলেও এমন উদ্যোগ সুন্দরবনে এই প্রথম।’’
সুন্দরবন এলাকায় স্থানীয় ও পরিযায়ী মিলে ৩০০-রও বেশি প্রজাতির পাখির উপস্থিতি নথিভুক্ত রয়েছে। তা নিয়ে চর্চার আদর্শ সময় হল শীতকাল। এতে স্থানীয় ও পরিযায়ী পাখি নিয়ে নতুন তথ্য-পরিসংখ্যানও মিলতে পারে বলে রাজ্যের বনকর্তাদের দাবি। ফিল্ড ডিরেক্টর জানিয়েছেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাশাপাশি গ্রাম লাগোয়া আমলেমেথির চরের মতো পরিযায়ী পাখির বিচরণক্ষেত্রগুলিতেও ছোট ছোট দলে ভাগ করে নিয়ে যাওয়া হবে পাখি উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের। প্রতিটি দলের সঙ্গে থাকবেন বন দফতরের গাইড এবং পাখি বিশারদেরা। সজনেখালির ‘প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে’ থাকবে পাখি নিয়ে আলোচনা-পর্বও।