পুলিশের সামনে বাজির মশলা রাখছেন ব্যবসায়ীরা। —নিজস্ব চিত্র।
একের পর এক বাজি কারখানা এবং গুদামে বিস্ফোরণ ও প্রাণহানির ঘটনার পর রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে পুলিশি অভিযান। বাজি, বাজির মশলা বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। গ্রেফতারও করা হয়েছে অনেককে। এর মধ্যেই বাজি তৈরির কারখানার কারিগরেরা এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় আশার আর্জি জানিয়ে বাজির মশলা তুলে দিলেন পুলিশের হাতে।
বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের ফলতা, মগরাহাট-সহ পুরসভা এলাকার বৈধ বাজি কারবারিরা বাজি তৈরির মশলা তুলে দেন পুলিশের হাতে। পাশাপাশি বাজি তৈরির পেশা ছেড়ে ভিন্ন রোজগারের পন্থার জন্য পুলিশের কাছে আর্জি জানান। এ নিয়ে ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুন দে বলেন, ‘‘চার দিকে যে ভাবে বাজি বিস্ফোরণের মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, সে দিক থেকে বাজি কারবারিরা নিজেদের পেশা ছাড়তে চেয়ে বাজির মশলা পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে নজির তৈরি করছেন। এমনকি, প্রায় ৮০০ কেজি বাজির মশলা জল দিয়ে নষ্ট করা হয়েছে। বাজি কারবারের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন যাতে অন্য পেশায় কাজ করতে পারে সে ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।’’
গত কয়েক দিনে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ এবং মালদহের ইংরেজবাজারে বাজি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল অব্যাহত। বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে ওই সব বাজি কারখানায় বিস্ফোরক তৈরি হত। সেখান থেকেই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। অন্য দিকে, প্রশাসনের তরফে অবৈধ বাজি কারখানা বন্ধ করতে অভিযান শুরু হয়েছে। তার মধ্যে বাজি ব্যবসায়ীদের এমন ‘আত্মসমর্পণ’ তাৎপর্যপূর্ণ। বজবজের ঘটনার পর ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিওয়ের নেতৃত্বে ডায়মন্ড হারবার মহকুমার বিভিন্ন বাজি কারখানায় তল্লাশি হয়। বিশেষ করে যে সব এলাকায় কালীপুজো বেশি হয়, সেই সব এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলার পর এমন ছবি দেখতে পেল পুলিশ।
ডায়মন্ড হারবার, মগরাহাট, ফলতার বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলার পর যাঁরা বাজি বিক্রি করতেন, বাজি তৈরি করতেন, তাঁরা সবাই বাজির মশলা পুকুরে ফেলে নষ্ট করে দেন।