অনুব্রতের বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সভা করেন অধীর। সেখান থেকে তীব্র কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেতাকে। —ফাইল চিত্র।
গরু পাচারকাণ্ডে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের প্রায় ১১ কোটি ২৬ লক্ষ টাকার সম্পত্তি ইডি হেফাজতে পেয়েছে বুধবার। ওই দিনই অনুব্রতের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে সভা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। আর সেখানে প্রায় কয়েকশো তৃণমূল কর্মী যোগ দিলেন কংগ্রেসে। তাঁদের প্রত্যেকের হাতে কংগ্রেসের পতাকা তুলে দিলেন অধীর। সেখান থেকে কেষ্টকে আক্রমণ করে একাধিক মন্তব্য করলেন বহরমপুরের সাংসদ। এমনকি, অধীরের ‘ভবিষ্যদ্বাণী’, জেল থেকে ফিরলে আর তৃণমূল করবেন না অনুব্রত। তিনি হয়তো বিজেপি করবেন।
পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে জেলায় জেলায় যোগদান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে কংগ্রেস। দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে অধীরের ‘গড়’ মুর্শিদাবাদে শয়ে শয়ে তৃণমূল কর্মী কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তবে কেষ্টর এলাকায়, বস্তুত, তাঁর বাড়ির সামনেই তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে এই যোগদান তাৎপর্যপূর্ণ বলে দাবি করছে হাত শিবির। সভা থেকে অধীর বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির কাছে সভা বাংলার মানুষকে বার্তা দিচ্ছে। এতদিন অসাধ্য মনে হত। আজ সম্ভব হয়েছে। এর থেকে বোঝা যায় পরিবর্তন আসছে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সংযোজন, ‘‘বাংলার ঐতিহ্য হারিয়েছি আমরা। এক দিন শান্তিনিকেতন, বোলপুরকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৈরি শিক্ষা পীঠস্থান হিসাবে সবাই চিনত। আজ আমরা দেখছি কী?’’ এর পর গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রতকে কটাক্ষ করে রবীন্দ্রনাথের কবিতার পংক্তি উদ্ধৃত করে অধীর বলেন, ‘‘কেষ্ট বেটাই চোর।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অনুব্রতের যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সেটা তো হাতির পেটে এলাচের দানা! আরও অনেক কেষ্ট বাজারে আছে। তাঁদের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে। আর যে সম্পত্তি (অনুব্রতের) বাজেয়াপ্ত হয়েছে, সেটা তো সকালের নাস্তা।’’
এর পর চ্যালেঞ্জের সুরে অধীর বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল আর তৃণমূল করবেন না। আমি বোলপুরে এসে বলে গেলাম। মিলিয়ে নেবেন আমার কথা। আগে অনুব্রত সবুজ পাঞ্জাবি পরতেন দিদিকে সন্তুষ্ট করার জন্য। এবার গেরুয়া পাঞ্জাবি পরবেন মোদীকে সন্তুষ্ট করার জন্য।’’ অধীরের দাবি, ‘‘অনুব্রত বাংলার বুকে বিরল এক নেতা। কারণ, তিনি সাংসদ নন, বিধায়ক নন, মন্ত্রী নন, কিন্তু গোটা বীরভূম ছিল তাঁর হাতে। ভারতের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে দ্বিতীয় বড় টাকার ফান্ড তৃণমূলের। বাংলাকে লুঠ করে এই টাকা কামানো হয়েছে।’’ এখানেই থামেননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘‘একটার পর একটা রাজ্যে মোদীর বিদায় ঘণ্টা বাজছে। কেন্দ্রেও আমরা বিদায় ঘণ্টা বাজাব। তৃণমূল জাতীয় দল ছিল। এখন আঞ্চলিক দলে পরিণত হয়েছে। আমরা তৃণমূলকে পঞ্চায়েতের দলে পরিণত করব।’’