প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতিতে পাইকান এলাকায় চলছে মাপজোক। নিজস্ব চিত্র
জমি-জটের কারণে ভাঙড়-২ ব্লকের পাইকান মৌজায় দীর্ঘদিন থমকে ছিল একটি জলপ্রকল্পের কাজ। অবশেষে সেই জট কাটিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে ওভারহেড ট্যাঙ্ক তৈরির কাজের প্রক্রিয়া শুরু হল। ব্লক প্রশাসন, ভূমি দফতর, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ও পুলিশের উপস্থিতিতে এ দিন জমি মাপজোক করে সীমানা চিহ্নিতকরা হয়।
বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, “জমি সংক্রান্ত কিছু সমস্যার কারণে পাইকান মৌজায় ওভারহেড ট্যাঙ্কের কাজ শুরু করা যাচ্ছিল না। গ্রামবাসীর সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত এই কাজ শেষ করে জল পৌঁছে দেওয়া যাবে।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে গঙ্গার জল পরিস্রুত করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি সরবরাহের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। নিউটাউনের একাংশ, ভাঙড়-২ ব্লক, রাজারহাট ও হাড়োয়া ব্লকের বাসিন্দারা এতে উপকৃত হবেন। মোট ৯১৪ কিলোমিটারের মধ্যে ইতিমধ্যে ৮৬৬ কিলোমিটার এলাকায় পাইপ লাইন পাতা হয়ে গিয়েছে।
ভাঙড়-২ ব্লকে ৮০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। এখানে ১৮টি ওভারহেড ট্যাঙ্কের মধ্যে ১২টির কাজ শেষ। চারটি নির্মীয়মাণ। সাতুলিয়ায় প্রায় তিন বিঘা জমিতে ভূগর্ভস্থ জলাধার নির্মাণ করা হচ্ছে। পাইকানে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ১ কোটি ২৬ লক্ষ টাকায় ৩১ ডেসিমেল জমি কিনলেও গ্রামবাসীদের একাংশের বাধায় এতদিন ওভারহেড ট্যাঙ্ক তৈরির কাজ শুরু করা যায়নি। এ দিনও জমি-মালিকদের একাংশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে, প্রশাসনের তৎপরতায় সমস্যা মেটে। এই ব্লকের উত্তর কাশীপুর মৌজায় এখনও জমি না মেলায় কাজ থমকে রয়েছে।তবে, উত্তর কাশীপুরের কারণে পাইকান পর্যন্ত জল সরবরাহে সমস্যা হবে না বলে দাবি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্তাদের।
ওই দফতর জানিয়েছে, এই কাজ শেষ হয়ে গেলে ভাঙড়-২ ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৫২ হাজার পরিবার উপকৃত হবে। এ ছাড়াও, ১৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৩০৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, প্রায় ২৫টি সরকারি অফিস, ৫২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রও এই প্রকল্পের মাধ্যমে জল পাবে। আগামী বছরের মধ্যে প্রতিটি বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জল পৌঁছে যাবে বলে আশাবাদী দফতরের আধিকারিকেরা।