Farmers Agitated at Patharpratima

কুইন্টাল পিছু বাড়তি দু’চার কেজি ধান কেন নেওয়া হবে, ক্ষোভ

ফড়েরাজ রুখতে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। বাজার থেকে বেশি দাম পাওয়ায় সরকারকে ধান বেচতে উৎসাহী কৃষকেরাও।

Advertisement

সমরেশ মণ্ডল

পাথরপ্রতিমা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৪১
Share:

পাথরপ্রতিমার কিসান মান্ডিতে চলছে ধান কেনাবেচা। —নিজস্ব চিত্র।

সরকার নির্ধারিত সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করেও লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ, পাথরপ্রতিমা ব্লকের কৃষকদের একাংশের। তাঁদের দাবি, কিসান মান্ডিতে কুইন্টাল পিছু ৩-৪ কেজি ধলতা (বাতিল ধান) ধরা হচ্ছে।

Advertisement

ফড়েরাজ রুখতে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। বাজার থেকে বেশি দাম পাওয়ায় সরকারকে ধান বেচতে উৎসাহী কৃষকেরাও। কিন্তু পাথরপ্রতিমা ব্লকের কৃষকদের একাংশের অভিযোগ, ধানের পুরো দাম পাওয়া যাচ্ছে না।

অভিযোগ, প্রতি কুইন্টালে ৩-৪ কেজি ধান বেশি নেওয়া হছে। ধান চাষি সুভাষচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘এই প্রথম সরকারি জায়গায় ধান বিক্রি করতে এসে অভিজ্ঞতা ভাল হল না। ধলতা বড় বেশি ধরা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ভাল দাম পাছি না। সরকারকে বিক্রি করে তা হলে লাভ কী হল!’’

Advertisement

বরোদাপুর এলাকার চাষি সুনীল মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা ছোট চাষি। কিছু ধান বিক্রি করে সেই টাকায় আবার ফসল লাগাই। সরকার সুবিধা দিলেও তা কার্যত দেখতে পাচ্ছি না। কুইন্টাল প্রতি আড়াই কেজি করে ধান বেশি দিতে হয়েছে।’’

ব্লক প্রশাসন সূত্রের অবশ্য দাবি, ধানের গুণাগুণ বিচারের জন্য কৃষক ও রাইস মিলের মালিকদের নিয়ে একটি কমিটি আছে। তারাই ধান ক্রয় করে। যদি একেবারে নিম্নমানের ধান থাকে, সে ক্ষেত্রে ধলতা নেওয়া হতে পারে। তবে এমনিতে ধলতা নেওয়ার ব্যাপার নেই।

প্রশাসন ধান কেনার ব্যাপারে সম্প্রতি নতুন নিয়ম চালু করেছে। চালকলগুলি একই নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ধান কিনতে পারবে না। জায়গা বদলানো হবে নিয়মিত। পাশাপাশি, ধান কেনার প্রক্রিয়ার দায়িত্বে যে আধিকারিকেরা থাকেন, তাঁদেরও বদলি করা হবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর। অর্থাৎ, একই ব্যক্তি টানা কোনও নির্দিষ্ট জায়গায় দায়িত্ব পালন করবেন না। ধান বিক্রির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কৃষকেরাই গুরুত্ব পাবেন। কোনও মধ্যস্থতাকারী থাকবে না। নজরদারির জন্য জেলায় এক জন বিশেষ আধিকারিকও থাকবেন।

কিন্তু এত সবের পরেও চাষিরা অনেকে খুশি নন। তাঁদের সমস্যার কথা শুনে ব্লক কৃষি আধিকারিক শুক্রবার পাথরপ্রতিমা কৃষক বাজার পরিদর্শন করেন। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। পাথরপ্রতিমার বিডিও মহম্মদ ইজ়রাইল বলেন, ‘‘সমস্যার কথা শুনেছি। খাদ্য দফতর ও ব্লক কৃষি আধিকারিককে পাঠানো হয়েছিল। কোনও সমস্যা যাতে না হয়, তা দেখা হচ্ছে।’’

বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ তুলছে বিরোধীরাও। স্থানীয় বিজেপি নেতা অশোক জানার কথায়, ‘‘বাড়তি ধান নিয়ে তৃণমূল নেতা ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর পকেট ভরানো হছে। ধান কেনার নাম করে কাটমানি নিছে সরকার।’’

তৃণমূল নেতা তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ বাপি হালদার অবশ্য বলেন, ‘‘ধান কেনা নিয়ে অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তবে ধানের গুণগত মান খারাপ থাকলে পরে তা ঠিক করে এনে বিক্রি করা যাবে। কোনও বাড়তি ধান নেওয়ার নিয়ম নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement