এই চিঠিই পাঠানো হয়েছে রেশন আধিকারিককে। এমনি অভিযোগ রেশনমালিকদের। — নিজস্ব চিত্র।
রেশন দোকানে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না গ্রাহকদের। বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে হবে। প্রয়োজনে বাতিল করতে হবে লাইসেন্স। উত্তর ২৪ পরগনার গারুলিয়ার দু’টি রেশন দোকানের বিরুদ্ধে এই মর্মে চিঠি দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট রেশন অফিসারকে। কিন্তু চিঠি কোথা থেকে এল তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু হতেই যা ধরা পড়েছে তাতে রহস্য দানা বেঁধেছে।
সম্প্রতি গারুলিয়ার রেশন আধিকারিক গৌতম মল্লিকের কাছে দু’টি রেশন দোকান সম্পর্কে তদন্ত করার জন্য ‘নির্দেশ’ আসে। ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ওই রেশন দোকান দু’টি গ্রাহকদের কোনও পরিষেবা দিচ্ছে না। তদন্ত করে রেশন দোকানের মালিকদের লাইসেন্স ‘বাতিল’ করার মতো ব্যবস্থা নিতেও ‘নির্দেশ’ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে লেখা, তা পাঠানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে।
রেশন আধিকারিক ওই চিঠি পেয়েই সটান নির্দিষ্ট দোকানগুলিতে তদন্তে যান। কিন্ত তাঁর চোখে কোনও বেনিয়ম ধরা পড়েনি। এর পর চিঠিটি ভাল করে পড়তেই রহস্য ফাঁস হয়ে যায়। গৌতম দেখতে পান চিঠিতে একাধিক ভুল রয়েছে। আরও খোঁজখবর নিয়ে দেখা যায় ওই চিঠিটি নবান্ন থেকে নয়, পোস্ট করা হয়েছিল শ্যামনগর পোস্ট অফিস থেকে। এ নিয়ে রেশন আধিকারিক অবশ্য মুখ খুলতে চাননি।
কিন্তু যে দু’টি রেশন দোকানের মালিকের নামে চিঠি এসেছে, তাঁদের ঘুম উড়েছে। দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক রেশন ডিলারের কথায়, ‘‘এক শ্রেণির শয়তান লোক আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এই চিঠির ভিত্তিতে এর আগে তদন্তে এসেছিল খাদ্য দফতর। আমি চাইছি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অপরাধীর শাস্তি হোক।’’
বিষয়টি নিয়ে জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর প্যাড এবং তাঁর সই স্ক্যান করে নকল করা হয়েছে। তার পর তা ব্যবহার করে চিঠি লিখে পাঠানো হয়েছে। চিঠির বয়ানেও অজস্র ব্যকরণগত ভুল রয়েছে। তাতে কোনও সইও নেই। স্থানীয় বিধায়কের প্যাড নকল করেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমার কাছে কোনও অভিযোগও আসেনি। আর আমি যে কোনও চিঠি দিইনি তা-ও আমি বলেছি। আমরা সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করব। কেউ হয়তো ব্যক্তিগত রেষারেষিতে বা শত্রুতার কারণে এ সব করছেন। সাধারণ মানুষের কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন চিঠি পাঠানো হল তা জানতে হবে।’’