বন্ধ: অশোকনগরে পূর্ণিমাদের তালাবন্ধ এই বাড়িতে পড়েছে নোটিস
বাংলাদেশে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি কাণ্ডের তদন্তে নেমে অশোকনগরের বাসিন্দা পূর্ণিমা মৈত্র নামে এক মহিলাকে নোটিস ধরাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। শনিবার ইডির একটি দল তাঁর বাড়িতে আসে। মহিলা বাড়ি ছিলেন না। বাইরে নোটিস সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়েছে, পূর্ণিমাকে ২৯ জুন সকাল সাড়ে ১০টার সময়ে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হতে হবে। মামলার তদন্তে নেমে১৩ মে ইডি কর্তারা অশোকনগরের কয়েকটি বাড়িতে তল্লাশি চালান। গ্রেফতার করা হয় পূর্ণিমার স্বামী স্বপন ও দেওর উত্তমকে।
স্বপন-পূর্ণিমাদের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে অশোকনগরে এক চিকিৎসকের কাছ থেকে জমি কিনেছিলেন স্বপন। ছোট একটি বাড়ি ছিল সেখানে। তা ভেঙে পেল্লায় দোতলা বাড়ি করা হয়। লকডাউনের আগে গৃহপ্রবেশে হাজারখানেক লোককে খাইয়েছিলেন মৈত্র দম্পতি। মেনুতে ছিল খাসির মাংস, গলদা চিংড়ি, পাবদা মাছ। পূর্ণিমা পড়শিদের কাউকে কাউকে জানিয়েছিলেন, স্বামীর মাছের ব্যবসা আছে।
অশোকনগরের ওই বাড়িতে অবশ্য সব সময়ে থাকতেন না স্বপনেরা। মাঝে মধ্যে আসতেন। সে সময়ে কালো কাচ লাগানো গাড়িতে প্রায়ই বাইরে থেকে লোকজনকে যাতায়াত করতে দেখেছেন পড়শিরা। পূর্ণিমা জানিয়েছিলেন, আগে বারাসতে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। বাংলাদেশ থেকে এসেছেন অনেক কাল আগে। এখন আর সে দেশের নাগরিকত্ব নেই। এ দেশের নথিপত্র সব আছে। পুরভোটে স্বপনকে ভোট দিতে দেখা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলায় মে মাসে ইডি আরও কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিল। ধরা পড়েন ওই ব্যাঙ্কের অধিকর্তা প্রশান্ত হাওলাদার-সহ ৬ জন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি। তদন্তকারীদের দাবি, এ দেশের টাকা হাওয়ালা মারফত বাংলাদেশে পাচার হয়েছিল। সেখানে ওই ব্যাঙ্কে নানা ভুয়ো অ্যাকাউন্টে তা জমা হয়। ইডির দাবি, বাংলাদেশের ব্যাঙ্কের কয়েক হাজার কোটি টাকা হাত ঘুরে এ দেশের কয়েকটি ব্যাঙ্কে ফিরে আসে। তদন্তকারীদের দাবি, দু’দেশের মধ্যে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচারের মূল মাথা অশোকনগরের মাছ ব্যবসায়ী সুকুমার মৃধা। ইতিমধ্যে তাঁর বিভিন্ন অফিস ও বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। উদ্ধার হয়েছে নথিপত্র। সুকুমার বাংলাদেশে গ্রেফতার হয়েছেন। স্বপন-পূর্ণিমা তাঁরই আত্মীয় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। —ছবি: সুজিত দুয়ারি