শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন বস্ত্র। — নিজস্ব চিত্র।
পুজোর আগে দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলির প্রান্তিক পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াল শহরের বন্যপ্রাণপ্রেমী সংস্থা ‘শের’। সুন্দরবন এবং জঙ্গলমহলের বন্যপ্রাণ অধ্যুষিত জেলাগুলির প্রায় চার হাজার শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং প্রবীণ নাগরিকদের হাতে তুলে দেওয়া হল নতুন পোশাক।
আয়োজক সংস্থার প্রধান তথা রাজ্য বন্যপ্রাণ উপদেষ্টা পর্ষদের সদস্য জয়দীপ কুণ্ডু জানিয়েছেন, গত এক দশক ধরে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবেই জঙ্গল লাগোয়া গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুজোর উপহার। এ বছর দক্ষিণবঙ্গের বন ও বন্যপ্রাণের সবথেকে কাছে থাকা ১২টি অঞ্চলের মোট ৩,৭৫০ জনকে নতুন জামাকাপড় দিতে পেরেছেন তাঁরা। এই ১২টি অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে উপকূলবর্তী সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও ২৪ পরগনা দক্ষিণ বনবিভাগের বাঘ-মানুষের সংঘাতপ্রবণ বেশ কয়েকটি প্রত্যন্ত গ্রাম। বছরভর হাতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে বাস করা পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহল ও বিষ্ণুপুরের কিছু অনগ্রসর অঞ্চল।
হুগলী জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত কিছু এলাকা, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপ্রাণী বাঘরোলের প্রাকৃতিক আবাসস্থল হাওড়া জেলার প্রান্তিক কিছু অঞ্চলের বাসিন্দারাও রয়েছেন এই তালিকায়। শেরের সদস্য সুচন্দ্রা কুন্ডু জানিয়েছেন, মানুষ ও বন্যপ্রাণের সঙ্ঘাত প্রশমিত করার লক্ষ্যেই তাঁদের এই প্রয়াস। বন ও বন্যপ্রাণের সহ্গে বাসস্থান ভাগ করে থাকা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই কর্মসূচিতে তাঁরা সহযোগিতা পেয়েছেন কলকাতার তিনটি স্কুল এবং দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের। প্রায় একমাস ধরে চলা এই উপহার বিতরণ কর্মসূচি পরিচালনায় সাহায্য করেছেন সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প, ২৪ পরগনা দক্ষিণ বনবিভাগ, পাঞ্চেত বন বনবিভাগ, মেদিনীপুর বনবিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট যৌথ বন পরিচালন সমিতিগুলি।
ওই কর্মসূচিতে সহয়তাকারী ‘দ্য বিএসএস স্কুলের’ অধ্যক্ষ সুনীতা সেন বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরেই প্রান্তিক শিশুদের জন্য নানা কর্মসূচিতে সহায়তা করি। এর জন্য স্কুলের ফেস্টের সময় পৃথক পরিকল্পনা থাকে। করোনা-পর্বে কিছু দিনের জন্য সেই প্রচেষ্টায় কিছুটা ভাটা পড়লেও এ বার জঙ্গল লাগোয়া অঞ্চলের শিশুদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা আনন্দিত।’’