হাত-বাড়ালেই: দর্শন দিতে হাজির দেবী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
পুজো দেখতে পথে বেরোতে বাধা-নিষেধ অনেক। ভিড় এড়াতে না বেরোলেই ভাল, সে কথা বার বার বলছেন চিকিৎসকেরা। একই বার্তা এসেছে হাইকোর্টের নির্দেশে।
এই আবহে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের উপরে পুজো করে মানুষের কাছে পৌঁছে প্রতিমা দর্শনের সুযোগ করে দিচ্ছে গোপালনগরের পাল্লা দক্ষিণপাড়া পুজো কমিটি। ভ্রাম্যমাণ দুর্গা ছুটে চলেছেন বনগাঁ মহকুমার গ্রাম-শহরের পথে পথে। ট্রাকের উপরে ঢাক-বাদ্যিরও বন্দোবস্ত রেখেছেন উদ্যোক্তারা। পুরোহিত পুজোও করবেন ট্রাকের উপরেই। পুজোর সব দিনই এই ট্রাক ঘুরবে নানা এলাকায়। ব্যানার-পোস্টার দিয়ে করোনা-সচেতনতা নিয়ে বার্তাও থাকছে ট্রাকের গায়ে। লেখা থাকছে, ‘করোনা থেকে বাঁচতে মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করুন। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন।’
৮৫ বছরের পুরনো এই পুজো। খোলামেলা মণ্ডপও করেছেন তাঁরা। পনেরো মিটার দূরে ব্যারিকেড করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও কেন ভ্রাম্যমাণ পুজোর আয়োজন?
পুজো কমিটি জানাচ্ছে, করোনা পরিস্থিতিতে মহকুমার বহু মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। বেশিরভাগই হোম আইসোলেশনে বাড়িতে রয়েছেন। তাঁদের পরিবারের লোকজনও বাড়িতে। আক্রান্তেরা সুস্থ হলেও তাঁদের পক্ষে বাইরে বেরিয়ে মণ্ডপ বা প্রতিমা দর্শন করা সম্ভব নয়। এই সব মানুষ এবং তাঁদের পরিবারের কথা ভেবেই ভ্রাম্যমান মণ্ডপ করা হয়েছে। বাড়িতে বসেই প্রতিমা দর্শনের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
পুজো কমিটির সম্পাদক কিশোরকুমার দে বলেন, ‘‘প্রথমে ভাবা হয়েছিল, ভ্রাম্যমান মণ্ডপ কেবল করোনা আক্রান্ত বা তাঁদের পরিবারের লোকজনের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু আদালতের নির্দেশের পরে এখন সব মানুষের কাছে মণ্ডপ নিয়ে হাজির হওয়ার কথা ভেবেছি। এর ফলে মানুষ বাড়িতে বসে প্রতিমা দর্শন করতে পারবেন। বাইরে বেরোতে হবে না। করোনা সংক্রমণও ঠেকানো যাবে।’’
তবে হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত মতোই ট্রাকে প্রতিমার পুজো হলেও সেখানে অঞ্জলি বা সিঁদুরখেলার ব্যবস্থা রাখেননি উদ্যোক্তারা। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও এমন পদক্ষেপের প্রশংসা করছেন। বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলেন, ‘‘খুবই সময়োপযোগী এবং দৃষ্টান্তমূলক কাজ।’’