নতুন লক্ষণ ডেঙ্গিতে, চিন্তিত চিকিৎসকেরা

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গত বছরও ডেঙ্গি আক্রান্তদের দেখা গিয়েছে, পেটে ব্যথা, পেট ফোলা, খিদে না থাকা,  শরীরে ব্যথা।  কিন্তু এ বার ওই সব উপসর্গ ছাড়াও কয়েকটি নতুন জিনিস দেখা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবড়া শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ০৪:১৯
Share:

পরিদর্শন: হাবড়ার খাল-বিল ঘুরে দেখছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র

হাবড়ায় ডেঙ্গি-আক্রান্তদের ক্ষেত্রে নতুন উপসর্গ চিন্তায় ফেলেছে চিকিৎসকদের। হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন উপসর্গ নিয়ে ইতিমধ্যেই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও একজন ডেঙ্গি আক্রান্তকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গত বছরও ডেঙ্গি আক্রান্তদের দেখা গিয়েছে, পেটে ব্যথা, পেট ফোলা, খিদে না থাকা, শরীরে ব্যথা। কিন্তু এ বার ওই সব উপসর্গ ছাড়াও কয়েকটি নতুন জিনিস দেখা গিয়েছে। হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘এ বার ডেঙ্গি আক্রান্তদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে, অনেকের হঠাৎ করে কাঁপুনি দিয়ে ধুম জ্বর আসছে। সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। রোগী মিনিট কুড়ির মধ্যে মারা যাচ্ছেন।’’

এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ডেঙ্গি আরও কত ভয়ঙ্কর চেহারায় হাজির হবে, তা বোঝা মুশকিল হয়ে উঠছে।’’ এ দিকে হাবড়া হাসপাতালে রোজই ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত ১৬০ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। তার মধ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত ৯৮। তবে জ্বর ডেঙ্গির আক্রান্ত রোগীর চাপ কমাতে হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। হাসপাতালে এত দিন শয্যার সংখ্যা ছিল ১৩১। তার ফলে এক শয্যায় তিন চারজন রোগী রাখতে হচ্ছিল। মেঝেয় রোগী থাকছিলেন। সমস্যা মেটাতে কয়েক দিন ধরে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সংখ্যা বেড়েছে আরও ৫৯টি। ফলে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীকে এখন মেঝেয় রেখে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে না।

Advertisement

এলাকার অনেকেই হাসপাতালে শয্যা না থাকার কারণে বাধ্য হয়ে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তাতে খরচও বেশি হচ্ছিল। সেই সমস্যা কিছুটা হলেও কমল বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মনে করেন। পাশাপাশি প্রশাসন ও সেচ দফতরের তরফে পদক্ষেপ করা হচ্ছে যাতে বৃষ্টির জমা জল খাল বিল বাওরের মাধ্যেমে বেরিয়ে যেতে পারে। হাবড়ার নিকাশি ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি খাল বিলের উপর। শহর ও গ্রামের জমা জল খাল বিল দিয়ে অতীতে বেরিয়ে যেত। এখন তা যায় না। খাল বিলগুলি বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের অভাবে ও বাসিন্দারা খাল বিল দখল করে নেওয়াতেই এই সমস্যা হয়েছে। জমা জল বেরিয়ে যেতে না পারায় তাতে মশা বংশবিস্তার করছে।

সম্প্রতি সেচ দফতর, স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসনের কর্তারা খাল বিলগুলি সরেজমিনে পরীক্ষা করেন। হাবড়ার বিডিও শুভ্র নন্দী বলেন, ‘‘১০ দিনের মধ্যে ওই খাল বিল দিয়ে যাতে জল চলাচল করতে পারে তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রশাসনের কর্তারা গ্রামবাসীদের ডেঙ্গি মশা শনাক্ত করে চিনিয়ে দিচ্ছেন। তাঁদের দিয়েই মশার লার্ভা ধ্বংস করানো হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement