—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনা হবে বলে বাজেটে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। তাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পরিযায়ীদের অনেকেই খুশি। তবে অনেকে সেই সঙ্গে দাবি করেছেন, চিকিৎসার সুযোগের পাশাপাশি শ্রমিকেরা যাতে বাংলাতেই কাজ পান, সেদিকে নজর দিক সরকার।
প্রতি বছর সুন্দরবনের গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং-সহ আশপাশের বহু এলাকা থেকে বড় সংখ্যায় বাসিন্দারা পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে কাজের জন্য যান। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় মোট পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ১ লক্ষ ৩৭ হাজার। অন্য রাজ্যে কাজে গিয়ে অসুস্থ হয়ে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুও হয় পরিযায়ী শ্রমিকদের। ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে গত দু’বছরে দুর্ঘটনাতেও মারা গিয়েছেন কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকার সাত জন পরিযায়ী শ্রমিক। তাই রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপে খুশি পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেই।
গোসাবার বাসিন্দা রবিন সর্দার, নিবাস মণ্ডলেরা বললেন, ‘ভিন্ রাজ্যেও যদি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা পাই তাহলে অনেকটা ভরসা পাব।’’ তবে সরকার ঘোষণা করলেও ভিন্ রাজ্য অসুস্থ হয়ে পড়ার পর বাস্তবে কতটা কাজ হবে তা নিয়ে সংশয়ও রয়েছে অনেকের। পুণেতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত হাসনাবাদের কাদের গাজী বললেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে রাজ্যেরই বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে অনেকে বিপাকে পড়েন বলে শুনে। রাজ্যের বাইরে কী হবে জানিনা।’’
কেরলে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত মৌসুনী দ্বীপ এলাকার বাসিন্দা শেখ করিম বলেন, ‘‘সরকার যদি আমাদের জন্য আলাদা করে কিছু কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করত তাহলে আর বাইরে আসতে হত না। ভিন্ রাজ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডেরও প্রয়োজন পড়বে না।’’
সেই সুরেই রাজ্যের শাসক তৃণমূলকে নিশানা করেছে বিজেপি। সাগরের বিজেপি নেতা অরুণাভ দাস বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের কথা না ভেবে সরকার তাঁদের জন্য কর্মসংস্থানের কথা ভাবুক, যাতে তাঁরা আর ভিন্ রাজ্যে না যান। কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত যদি রাজ্যে চালু হত তাহলে স্বাস্থ্যসাথীর প্রয়োজন হতো না। সামনে ভোট, তাই ভাঁওতাবাজি করছে সরকার।’’ তৃণমূলের নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অভিষেক দাসের পাল্টা যুক্তি, ‘‘কর্মশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে ভিন্ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা ভেবে রাজ্য সরকার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিচ্ছে। তা মার্চ মাস থেকে কার্যকরী হবে। তখন বহু সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিক ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরে আসবেন।’’