প্রতীকী ছবি।
এ বার ডেঙ্গি-মশার লার্ভা শনাক্ত করতে ড্রোন ব্যবহার শুরু করল প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। শনিবার সকালে হাবড়া পুর এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে কর্মসূচির অনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। কয়েকটি এলাকায় ড্রোনের মাধ্যমে মশার লার্ভা শনাক্ত করা গিয়েছে। এ দিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা কল্যাণ মুখোপাধ্যায়।
হাবড়া-অশোকনগর এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ৯৪ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন।
স্বাস্থ্য দফতর পুরসভা ও প্রশাসনের কর্মীরা এলাকায় ঘুরে ডেঙ্গি মশার লার্ভা খুঁজছেন। মশা মারার তেল চুন, ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে। মশা মারতে ধোঁয়া দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে লাগাতার প্রচার কর্মসূচি চলছে। এত কিছুর পরেও অবশ্য ডেঙ্গির প্রকোপ বন্ধ করা যাচ্ছে না।
ডেঙ্গি মোকাবিলায় কেন ড্রোন ক্যামেরার সাহায্য নিতে হচ্ছে?
জেলাশাসক বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের বাড়ির ছাদে অনেক সময়ে জল জমে। স্বাস্থ্যকর্মীদের নজর এড়িয়ে যায়, এমন জায়গায় জমা জলে ডেঙ্গির মশার লার্ভা আছে কিনা, তা শনাক্ত করতে ড্রোনের সাহায্য নেওয়া।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মশার লার্ভা শনাক্ত করতে ড্রোনের ব্যবহার উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় এই প্রথম। এর আগে শহর কলকাতায় ড্রোন ব্যবহার হয়েছে এ কাজে। দু’একদিনের মধ্যে বিধাননগর ও ব্যারাকপুর মহকুমাতেও ড্রোনের ব্যবহার হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।
ডেঙ্গি মশার লার্ভা খুঁজে বের করতে তা হলে কী পুরকর্মী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের কোনও খামতি থেকে যাচ্ছে? জেলাশাসক অবশ্য এ কথা মানতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভার কর্মী বা স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় ঘুরলেও সব জায়গায় নজর দেওয়া সম্ভব নয়। ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে মশার লার্ভা খুঁজে বের করতেও সমস্যা হয়। ওই সব সমস্যা দূর করতেই ড্রোনের ব্যবহার।’’
সম্প্রতি হাবড়া পুরসভা কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছিল, পুরকর্মীরা বাড়িতে গেলে বহু মানুষ তাঁদের বাড়ির ভিতর ঢুকতে দিতে বাধা দিচ্ছেন। ঢুকতে দিলেও ছাদে যেতে দিচ্ছেন না। ফলে মশার লার্ভা খুঁজে বের করতে সমস্যায় পড়ছেন পুরকর্মীরা। ড্রোন ব্যবস্থা চালু হওয়ায় সেই সমস্যা আর থাকল না বলেই মনে করছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহারের ফলে পরিবারের গোপনীয়তা বিঘ্নিত হবে না তো? জেলাশাসকের আশ্বাস, ‘‘মানুষের গোপনীয়তা কোনও ভাবে বিঘ্নিত হবে না। সকলকে জানিয়েই এই কাজ করা হবে।’’
তবে ডেঙ্গি প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের সচেতনতার উপরে জোর দিচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। কল্যাণ বলেন, ‘‘ড্রোন ব্যবহার করে প্রথমে মশার লার্ভা শনাক্ত করা হবে। পরে পুরকর্মী বা স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে গিয়ে লার্ভা ধ্বংস করে দেবেন।’’ ড্রোন ব্যবস্থা নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে কৌতুহল ছড়িয়েছে। বহু মানুষ ড্রোন দেখতে ভিড় করছিলেন।
তাঁদের কথায়, ‘‘এর ফলে যদি ডেঙ্গির প্রকোপ কমানো সম্ভব হয়, তা হলে আমরা সত্যিই উপকৃত হব।’’