অদর্শন: এক সময়ে এদের টানে ভিড় করতেন অনেকে। — ফাইল চিত্র
লকডাউন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে বকখালি পর্যটন কেন্দ্র। শুরু হয়েছে পর্যটকদের আনাগোনা। সমুদ্র সৈকত ছাড়াও বকখালির অন্যতম আকর্ষণ ছিল ডিয়ার পার্ক ও ইকো ট্যুরিজম পার্ক। কিন্তু বর্তমানে এই পার্ক দু’টি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে হতাশ পর্যটকদের একটা বড় অংশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বেশ কয়েক বছর ধরে বকখালির সমুদ্রে চর পড়েছে। এখন ভাটার সময়ে সৈকত থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে তবে সমুদ্রের জল মেলে। ফলে অনেকটাই আকর্ষণ হারিয়েছে সমুদ্র। এই পরিস্থিতিতে বহু পর্যটকের প্রিয় জায়গা হয়ে উঠেছিল ডিয়ার পার্ক। জঙ্গলঘেরা জায়গায় প্রচুর হরিণ ছাড়াও জলাশয়ে দেখা মিলত কুমিরের। ডিয়ার পার্ক দিয়ে কিছুটা এগিয়ে ঝাউগাছ-ঘেরা জঙ্গলের মধ্যে ইকো ট্যুরিজম ম্যানগ্রোভ পার্কেও পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকত। ওই পার্কের জন্য জঙ্গলের প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছিল। জঙ্গলে-ঘেরা পার্কে সময় কাটানোর জন্য কাঠের ছোট ছোট ১০টি ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে বসার জায়গা, শৌচালয় ও পানীয় জলের ব্যবস্থাও ছিল। ম্যানগ্রোভ পার্কের মধ্যে প্রায় ৪৫ ফুট উচ্চতার কাঠের ওয়াচ টাওয়ার তৈরি হয়েছিল।
সম্প্রতি ইয়াসে তছনছ হয়ে গিয়েছে এই পার্ক দু’টি। জলের তোড়ে ডিয়ার পার্কের প্রাচীর ভেঙে পড়ায় সমস্ত হরিণ ও কুমির ভেসে যায়। ভেঙে তছনছ হয়ে যায় ট্যুরিজমের পার্কের ক্যাম্পগুলিও। কাঠের ওয়াচটাওয়ারটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে দু’টি পার্কই বন্ধ রাখা হয়েছে। হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে পর্যটকদের।
বকখালি ফ্রেজারগঞ্জ হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অলোক চক্রবর্তী বলেন, “পর্যটকেরা অনেকেই হরিণ-কুমিরের পার্কের কথা জানতে চাইছেন। বন্ধ থাকায় হতাশ হচ্ছেন। গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের তরফে একটা নতুন পার্ক তৈরির কাজ চলছে। পর্ষদের সঙ্গে ডিয়ার পার্কের ব্যাপারে আলোচনা করব।” নামখানার বিডিও শান্তনু ঠাকুর সিংহ বলেন, “নতুন করে ম্যানগ্রোভ বসিয়ে জঙ্গল সাজিয়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। পর্যটক টানতে পার্ক তৈরি নিয়েও বৈঠক ডাকা হবে।”