ব্যস্ততা: চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। হিঙ্গলগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে অনেক জায়গায় বন্ধ ছিল দুর্গাপুজো। যেখানে পুজো হয়েছে, সেখানেও কাটছাঁট করা হয়েছিল খরচে। ফলে, দু’বছর কার্যত লাভের মুখ দেখেননি মণ্ডপ ব্যবসায়ীরা। এ বছর বাজার কিছুটা উঠেছে। পুজোর সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির জেরে লাভের অঙ্ক আগের মতো থাকছে না বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের ডেকরেটর অ্যান্ড সাউন্ড মালিক সমিতির অধীনে ৩৩ জন প্যান্ডেল ব্যবসায়ী আছেন। সমিতি সূত্রে খবর, হাতে গোনা কয়েকটি লক্ষাধিক টাকার পুজো মণ্ডপ হচ্ছে। বাকি বেশিরভাগ মণ্ডপের বাজেট ১৫-৩০ হাজারের মধ্যে। ফলে বড় কাজ তেমন মিলছে না। সমিতির এক সদস্য জানান, করোনার আগে ১৫-২০ হাজার টাকার পুজো মণ্ডপে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা লাভ থাকত। এখন প্রায় ১০০০ টাকা লাভ কমেছে। ১ লক্ষ টাকার মণ্ডপে সব খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকত ২৫-৩০ শতাংশ। এখন তা কমে হয়েছে ২০ শতাংশ।
সমিতির সম্পাদক বাপ্পাদিত্য রায় জানান, এখন নতুন করে মণ্ডপ তৈরির শ্রমিকের কাজে কেউ আসছেন না। পুরনো শ্রমিকেরা ৪৫০-৫০০ দৈনিক মজুরি চাইছেন। অনেকে শহরে চলে যাচ্ছেন বেশি আয়ের আশায়। তাই গ্রামে মণ্ডপ তৈরির ক্ষেত্রে শ্রমিক পিছু খরচ বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘‘অনেক ছোট ব্যবসায়ী গোটা মরসুমে দু’একটি কম বাজেটের মণ্ডপ তৈরির বরাত পান। কিন্তু লাভ এত কম থাকে, পুজোয় ছেলেমেয়েদের নতুন পোশাক দেওয়ার মতো আর্থিক ক্ষমতাও থাকে না।’’
বসিরহাট মহকুমা ডেকরেটর মালিক সমিতির-সহ সম্পাদক শঙ্কর দাস জানান, গোটা বসিরহাটে ৮০০ ব্যবসায়ী এই কাজে যুক্ত। এ বছর পুজোর সংখ্যা হাজারখানেক। তবে বাজেট বিশেষ বাড়েনি। শঙ্কর বলেন, ‘‘সব জিনিসের দাম বেড়েছে। তাই একই বাজেটে করোনার আগে যে চাকচিক্য করা যেত, এখন তা আর করা সম্ভব হচ্ছে না। লাভ ক্রমশ কমছে।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘ইউনেস্কোর তরফে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল দুর্গাপুজো। ক্লাবগুলিও ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান পাচ্ছে। অথচ আমাদের দিকে সরকারের নজর নেই।’’
হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই ডেকরেটর ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। আশা করা যায়, ওঁরাও লাভের মুখ দেখবেন। সরকার সকলের পাশে আছে।’’