খাল থেকে তোলা হচ্ছে দেহ। ইনসেটে, মঞ্জুরা বিবি। ছবি:সুজিত দুয়ারি
খাল পাড়ের মাটি খুঁড়ে মিলল মহিলার দেহ। অশোকনগরের ঘটনা। অভিযোগ, মহিলার প্রাক্তন স্বামীই খুন করে খাল পাড়ে পুঁতে দেয় তাঁকে। স্বামীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, অশোকনগরের ভাতছালা এলাকার বাসিন্দা বছর চল্লিশের মঞ্জুরা বিবি বুধবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন। বছর কুড়ি আগে পাশের ভুরকুন্ডা পঞ্চায়েতের চাপড়া এলাকার বাসিন্দা জিয়াউল হকের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। সাংসারিক বিবাদের জেরে মঞ্জুরা ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান।
বাপের বাড়ির সদস্যদের অভিযোগ, বুধবার প্রাক্তন শাশুড়ি ফোন করে ডাকেন মঞ্জুরাকে। তারপর থেকেই খোঁজ মিলছিল না তাঁর। বৃহস্পতিবার পরিবারের তরফে অশোকনগর থানায় জিয়াউল ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হয়।
তদন্তে নেমে পুলিশ শনিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে মঞ্জুরার প্রাক্তন স্বামী জিয়াউল হক ও তার এক বন্ধু হাবিবুল গাজিকে গ্রেফতার করে। মঞ্জুরার প্রাক্তন শাশুড়ি তোহরা বিবিকেও অশোকনগরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, জিয়াউল ও হাবিবুলকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতেই আসল ঘটনা সামনে আসে। পুলিশের দাবি, জেরায় জিয়াউল জানায়, সে মঞ্জুরাকে খুন করে মাটিতে পুঁতে দিয়েছে।
পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রাক্তন শাশুড়ির ফোন পেয়ে মঞ্জুরা জিয়াউলের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। খালের কাছে জিয়াউলের সঙ্গে দেখা হয়। জিয়াউলের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মামলা করেছিলেন মঞ্জুরা। যা নিয়ে দু’জনের মধ্যে অশান্তি চলছিল। জিয়াউল মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছিল। সে দিন তা নিয়ে পথেই দু’জনের মধ্যে বচসা হয়। অভিযোগ, জিয়াউল মঞ্জুরার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে। পরে খালের পাড়ে গর্ত খুঁড়ে দেহ মাটি চাপা দেয়। পুলিশের দাবি, ওই কাজে তাকে সহযোগিতা করেছিল হাবিবুল।
পুলিশ জানিয়েছে, জিয়াউলের কথা মতো সোমবার সকালে বিদ্যাধরী খালের নির্দিষ্ট জায়গায় মাটি খুঁড়ে মঞ্জুরার দেহ মেলে। দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা গুপি মজুমদার বলেন, “মহিলা সেলাই কারখানায় কাজ করতেন। নিখোঁজ হওয়ার পরে গ্রামের লোকজনকে নিয়ে আমি থানায় গিয়েছিলাম। এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। জিয়াউলের কঠোর শাস্তি চাই।”
মঞ্জুরার ছেলে রওশান হক বলেন, “কয়েক দিন ধরেই মামলা তোলার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। মা রাজি ছিলেন না। সে কারণেই খুন করা হয়েছে।”