কৃষ্ণপদ ও সরস্বতী। ক্যানিংয়ে। নিজস্ব চিত্র
এক বৃদ্ধ দম্পতিকে মারধরের অভিযোগ উঠল মেয়ে ও জামাইয়ের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ চার বছর ধরে মানসিক ও শারীরিক ভাবে ওই বৃদ্ধ দম্পতির উপর অত্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। সোমবার ক্যানিং থানায় মেয়ে ও জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন সরস্বতী সর্দার নামে ওই বৃদ্ধা। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যানিংয়ের ধলিরবাটি গ্রামে থাকেন সরস্বতী ও কৃষ্ণপদ। বছর চারেক আগে বাসন্তীর মসজিদবাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা দেবব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তাঁদের একমাত্র মেয়ে তাপসীর বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকেই মেয়ে-জামাই ক্যানিংয়ে চলে আসেন। সরস্বতীর বাড়িতেই কার্যত ঘরজামাই হিসেবে থাকতে শুরু করেন দেবব্রত। অভিযোগ, এ বাড়িতে এসেই তাঁরা শ্বশুর ও শাশুড়ির উপর অত্যাচার শুরু করেন। এমনকী প্রাণনাশের হুমকিও দেন। ভয় দেখিয়ে জমি, সম্পত্তি লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করেন বলে অভিযোগ। সরস্বতী ও কৃষ্ণপদর একটি দশ কাঠা জমির দলিল চুরি করে তা নিজেদের নামে বানিয়ে নিয়েছেন অভিযুক্ত মেয়ে জামাই বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি।
পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে সংসার চালানোর জন্য কয়েকটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন সরস্বতী। স্বামী কৃষ্ণপদ অসুস্থ। তাঁদের একটি পুত্র সন্তান আছে। তিনি কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। সরস্বতীর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মেয়ে জামাই এই বাড়িতে ওঠে। ওদের থাকার জায়গা দিই। তাঁর কথায়, ‘‘কিন্তু এই জমি বাড়ি সব লিখিয়ে নেওয়ার জন্য দিনের পর দিন ওরা আমাদের দু’জনকে চাপ দিতে থাকে। আমরা লিখে দিইনি বলে আমাদের দু’জনকেই মাঝে মধ্যে মারধর করে। চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানোর ভয়ও দেখায়।’’ কৃষ্ণপদ বলেন, “ওরা সব সময় আমাদেরকে মারধর করে। খেতে পড়তে তো দেয় না উল্টে আমাদের জিনিষপত্র চুরি করে নেয় মেয়ে জামাই।’’
যদিও এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা মেলেনি অভিযুক্তদের। তাপসীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাবা মাকে মারধরের কথা অস্বীকার করেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও এই ঘটনায় এখনও কাউকে আটক বা গ্রেফতার করেনি পুলিশ।