‘অশনি’ নিয়ে সতর্কতা দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলীয় অঞ্চলে। ফাইল চিত্র।
আমপান বা ইয়াসের মতো ‘অশনি’ মোকাবিলাতেও একই দাওয়াই প্রয়োগ করতে চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। উপকূলবর্তী এলাকার সঙ্গে নামখানার মৌসুনি দ্বীপ এবং সাগরের ঘোড়ামারা দ্বীপের বাসিন্দাদেরও সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পর জরুরি বিভাগগুলির অধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে বেশ কয়েক দফা বৈঠক করা হয়। কী ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হবে তার রূপরেখাও তৈরি করে ফেলা হয়। আলিপুরে জেলা সদর এবং প্রতিটি মহকুমা শাসকের দফতর এবং বিডিও অফিসগুলিতে একটি করে কন্ট্রোল রুম খুলে ফেলা হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে পাঁচটি ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম তৈরি রাখা হয়েছে। প্রতিটি টিমে ২০ জন করে সিভিল ডিফেন্স সদস্য রয়েছেন। কোনও জায়গায় পরিস্থিতি খারাপ হলে তাঁরা উদ্ধারকাজে নামবেন। পাশাপাশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এনডিআরএফ), রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এসডিআরএফ), উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং নৌ বাহিনীকেও ঝড়ের জন্য প্রস্তুত থাকার আবেদন জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যাঁরা এখনও নদী বা সমুদ্রে রয়েছেন, তাঁদেরও ফিরে আসারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ দিকে এগিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে নদী এবং সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার কয়েক হাজার মানুষকে নিরাপদ আশয়ে সরিয়ে নিয়ে আসা হবে বলে স্থির করেছে প্রশাসন। তাই সাইক্লোন শেল্টারগুলিও খুলে দেওয়া হয়েছে। কাঁচা বাঁধের উপর বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। প্রতিটি পঞ্চায়েত এবং বিডিও অফিসের পর্যাপ্ত ত্রিপল, শুকনো খাবার এবং পানীয় জলের প্যাকেট মজুত করতে বলা হয়েছে।
বকখালির সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় সতর্কতামূলক প্রচার প্রশাসনের। নিজস্ব চিত্র।
রবিবার সকাল থেকেই নামখানা, সাগর, পাথরপ্রতিমার দ্বীপ এলাকা এবং সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় জোরকদমে প্রচারও শুরু হয়েছে। নামখানার মৌসুনি দ্বীপ এবং সাগরের ঘোড়ামারা দ্বীপের বাসিন্দাদের ফ্লাড শেল্টার অথবা স্কুলে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। নামখানার বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের নির্দেশমতো সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঝড়ের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকেই কাজ করছি আমরা। বাঁধ এবং সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার উপর বাড়তি নজর রয়েছে। আশা করা যায়, বড়সড় কোনও বিপর্যয় ঘটবে না।’’
জেলাশাসক পি উলগানাথনের কথায়, ‘‘অন্য বার যে ভাবে বিপর্যয় মোকাবিলা করা হয়, এ বারও একই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ৯ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত পরিস্থিতির উপর সর্বদা নজর থাকবে।’’