প্রতীকী ছবি।
দক্ষিণে শুরু হয়েছে। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনায় আমপানে ক্ষতিগ্রস্তরা বাড়ি তৈরির টাকা পাননি। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও সর্বত্র নয়, শুরু হয়েছে দু’-একটি ব্লকে। উত্তর ২৪ পরগনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণাঙ্গ তালিকাই তৈরি হয়নি এখনও। ক্ষতিগ্রস্তদের বেশিরভাগই জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকলেও জানার কোনও পথ নেই তাঁদের।
কারওর মোবাইল ভেসে গিয়েছে। যাঁদের রয়েছে, হয় সেখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই, না হলে বিদ্যুৎ ফেরেনি। ব্যাঙ্কে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকাংশজনের। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার কাজ চলছে। তবে এখনও বহু এলাকায় পৌঁছতে পারেননি প্রশাসনের লোকেরা। তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত বহু বাড়ির হিসেব তালিকাতে নেই।
বসিরহাটে ইতিমধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। আরও ১৩ হাজার বাড়ির ক্ষতি আংশিক। সব বাড়ির তালিকা জেলাশাসকের দফতরে পাঠানো যায়নি এখনও। উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর কাজ শুরু হয়নি বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের রূপমারি পঞ্চায়েতের বেশকিছু গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত। বাইনাড়া গ্রামের বাসিন্দা কালিপদ গায়েন, জয়দেব গায়েন, নিতাই মুদি, কৃষ্ণা মণ্ডলেরা বলেন, “এখন রাস্তায় তাঁবু খাটিয়ে রয়েছি। সরকার থেকে টাকা না পেলে ঘর তৈরির কাজে হাত দিতে পারব না। জানি না অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে কি না?” গ্রামবাসীরা জানান, অনেকের মোবাইল ফোনও বানের জলে ভেসে গিয়েছে। এলাকায় বিদ্যুৎ না ফেরায় মোবাইলও অচল।
বনগাঁ মহকুমাতেও আমপানে ক্ষতিগ্রস্তেরা বাড়ি তৈরির সরকারি সাহায্য এখনও পাননি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ ব্লকে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৫ হাজার বাড়ি। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার বাড়ি। বিডিও সঞ্জয় কুমার গুছাইত বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠাতে শুরু করেছি।” বাগদা ব্লকের ক্ষতিগ্রস্তেরা জানিয়েছেন, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সোমবার পর্যন্ত টাকা ঢোকেনি। বিডিও জ্যোতিপ্রকাশ হালদার জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা জেলাশাসকের দফতরে পাঠানো হয়েছে। বনগাঁ ব্লকের ট্যাংরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দেখা গেল, এক ব্যক্তি পাটকাঠির-টিন দিয়ে ভাঙা ঘর মেরামত করছেন। তিনি জানালেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি।
জেলা প্রশাসন থেকে কাকদ্বীপ মহকুমার সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ ও পাথরপ্রতিমা ব্লকে বাড়ির ক্ষতিপূরণের টাকা পাঠানো হয়েছে। কাকদ্বীপের মহকুমা শাসক শৌভিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পিছু ২০ হাজার টাকা ব্লক থেকে বণ্টন শুরু হয়েছে।” বাসন্তী, ক্যানিং ও গোসাবার ক্ষতিগ্রস্তরা এখনও বাড়ি তৈরির টাকা পাননি।
তবে, আগামী দু’-একদিনের মধ্যেই টাকা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে বলেই জানিয়েছে ব্লক প্রশাসন। আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাথমিক একটি তালিকা তৈরি করে সমস্ত ব্লক থেকেই জেলাতে পাঠানো হয়েছিল। পূর্ণাঙ্গ তালিকা পরে পাঠানো হবে। তিনটি ব্লকে প্রায় ২৭০০ জনের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সেই টাকা উপভোক্তারা পেয়ে যাবেন। কুলতলি ব্লকেও ঝড়ে ঘর হারিয়েছেন বহু মানুষ। ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি বলে জানান তাঁদের অনেকেই। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি হয়েছে। ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়াও
শুরু হয়েছে।