গোলমাল: বাধার মুখে পিছু হঠল বাহিনী। নৈহাটিতে। ছবি: মাসুম আখতার
রেল কোয়ার্টার্স দখলমুক্ত করাকে কেন্দ্র করে গোলমাল বাধল নৈহাটিতে। তাতে লেগেছে রাজনীতির রং-ও।
বুধবার দুপুরে সিআরপিএফের জওয়ানেরা নৈহাটি স্টেশনের পাশের আবাসন উচ্ছেদ করতে গেলে বাধা দেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা যাবে না। শেষ পর্যন্ত ফিরে যায় আরপিএফ। তৃণমূলের বক্তব্য, এ দিন স্থানীয় বিজেপি নেতারা আরপিএফের সঙ্গে উচ্ছেদ করতে গিয়েছিলেন। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, উচ্ছেদে বাধা দিতেই গিয়েছিলেন এলাকায়।
নৈহাটি স্টেশন-লাগোয়া রেল আবাসনে তিনশোর বেশি কোয়ার্টার রয়েছে। তার মধ্যে কিছু আবাসন পরিত্যক্ত বলে রেল ঘোষণা করেছে। কিন্তু সেগুলিতেও লোকজন বসবাস করছেন। বেশ কিছু কোয়ার্টারে অবসরপ্রাপ্তেরা আছেন। কিছু কোয়ার্টারে রেলকর্মীরা থাকেন। সেখানকার বাসিন্দারা জানান, ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে তাঁরা বসবাস করছেন। এখন তাঁদের উচ্ছেদ করা হলে পথে বসতে হবে।
পরিত্যক্ত কোয়ার্টারগুলিতে রেলের কিছু ফেরিওয়ালা এবং দোকানদারেরা থাকেন। করোনা আবহে তাঁদের অবস্থা এমনিতেই খারাপ। এই অবস্থায় তাঁদের উচ্ছেদ করা হলে খুবই মুশকিলে পড়বেন বলে জানিয়েছেন অনেকেই। রেল যদি খালি জায়গায় তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে, তা হলে আবাসন ছেড়ে যেতে অবশ্য তাঁদের আপত্তি নেই।
রেল জানিয়েছে, বেশ কিছু দিন আগে জবরদখলকারীদের উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়েছিল। নিজেরা ঘর না ছাড়লে রেল সুরক্ষা বাহিনী যে তাঁদের তুলে দেবে, তারও উল্লেখ ছিল ওই নোটিসে। সেই মতো এ দিন রেল সুরক্ষা বাহিনী রেল কলোনির আবাসনে যায়। আগে থেকেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সেখানে ছিলেন। তাঁরা জওয়ানদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন। সেখানকার বাসিন্দারাও বিক্ষোভে যোগ দেন। জওয়ানদের কথা কাটাকাটি হয়। বাধা পেয়ে বাহিনী ফিরে যায়।
বিজেপির নৈহাটি মণ্ডল ২ সভাপতি সুব্রত দাসের নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরাও সেখানে যান। তৃণমূলের অভিযোগ, তাঁরা জওয়ানদের সঙ্গেই সেখানে গিয়েছিলেন আবাসনের দখল নিতে। যদিও সুব্রত বলেন, ‘‘ওরা মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমরা গরিবের পক্ষেই রয়েছি। আমরা আরপিএফকে বলেছি, গরিবদের উচ্ছেদ করলে আমরা ধর্নায় বসব। ওরা আশ্বাস দিয়েছে, খালি কোয়ার্টার ছাড়া আর কোনও কোয়ার্টারের দখল তারা নেবে না।’’ নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘বিজেপির লোকেরা বাধা দিতে এসে আরপিএফের সঙ্গে গল্প করছিল কেন। মানুষ বিপক্ষে বুঝতে পেরে এখন উল্টো কথা বলছে। রেলমন্ত্রী ওদের, স্থানীয় সাংসদ ওদের, ওরা তো চিঠি দিয়েই এটা বন্ধ করতে পারত। ওদের চালাকি মানুষ ধরে ফেলেছে। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে আমরা উচ্ছেদ করতে দেব না।’’