Ration Card

গরিবদের জন্য বরাদ্দ করা কার্ডে রেশন তোলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু! অভিযোগ সিপিএমের

বুধবার গাইঘাটা বিডিও অফিসে আবাস যোজনা নিয়ে সিপিএমের পক্ষ থেকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। শান্তনু অবশ্য প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দিকে আঙুল তুলেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:৩৮
Share:

গরিবদের জন্য বরাদ্দ পিএইচএইচ (প্রায়োরিটি হাউস হোল্ড) রেশন কার্ড রয়েছে বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের, দাবি সিপিএমের। — ফাইল ছবি।

গরিবদের জন্য বরাদ্দ পিএইচএইচ (প্রায়োরিটি হাউস হোল্ড) রেশন কার্ড রয়েছে বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের। এই কার্ড থাকলে ২ টাকা কেজি দরে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল এবং গম কিনতে পারেন গ্রাহক। অভিযোগ, গত মাসেও ওই কার্ডে রেশন তুলেছেন শান্তনুর পরিবারের লোক। এই অভিযোগ করেছেন সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য। বুধবার গাইঘাটা বিডিও অফিসে আবাস যোজনা নিয়ে সিপিএমের পক্ষ থেকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। শান্তনু অবশ্য প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দিকে আঙুল তুলেছেন। জানিয়েছেন, এত দিন এই বিষয়ে জানতেন না। অবশ্যই কার্ড ‘সারেন্ডার’ করবেন।

Advertisement

ডেপুটেশন দেওয়ার পর সিপিএম নেতা তন্ময় সরাসরি শান্তনুর রেশন কার্ডের নম্বর প্রকাশ্যে আনেন। তার পরেই বিডিওর উদ্দেশে বলেন, ‘‘বিডিও সাহেব শুনুন, আমি একটা নম্বর বলছি। এই রেশন কার্ডটি পিএইচএইচ এক জন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কী করে এই কার্ড ব্যবহার করেন? শান্তনু ঠাকুর চাইলে আমার বিরুদ্ধে কোর্টে যেতে পারেন। আমি কোর্টে গিয়ে তাঁর রেশন কার্ডটি তুলে ধরব।’’

এই প্রসঙ্গে গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি শান্তনু ঠাকুর-সহ তাঁর পরিবারের কয়েক জনের পিএইচএইচ রেশন কার্ড রয়েছে। তাঁদের উচিত ছিল, এই কার্ডগুলি সারেন্ডার করা। কিন্তু তাঁরা করেননি। এর বিরুদ্ধে আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া যায় কিনা আমরা দেখছি।’’

Advertisement

রেশন ডিলার জয়ন্ত মৃধাও বলেন, ‘‘শান্তনু ঠাকুরের পরিবারের কয়েক জনের পিএইচএইচ রেশন কার্ড রয়েছে। কার্ডগুলি সক্রিয় রয়েছে। তাঁরা প্রতি মাসে রেশন তুলতে আসেন। গত মাসেও তাঁরা রেশন তুলেছেন। পিএইচএইচ কার্ডে ৬ কেজি ৭৫০ গ্রাম চাল, ১ কেজি ২৫০ গ্রাম গম এবং ২ কেজি আটা-সহ মোট ১০ কেজি জিনিস পান তাঁরা।’’

শান্তনু পাল্টা আঙুল তুলেছেন সিপিএমের দিকে। শান্তনুর কথায়, ‘‘লুঠ তো ওঁরা ৩৪ বছর করেছে। এখন রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না।’’ তাঁর মা না বুঝেই রেশন তোলেন, সে কথাও জানিয়েছেন তিনি। বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘যখন কার্ড করা হয়েছিল, তখন মানুষ পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে দেখে না, এটা কোন ক্যাটাগরির। রাজ্যে ভূরি ভূরি ভুল রয়েছে। আমি রেশন কার্ড দেখিওনি, কী কার্ড এসেছে। মা রেশন তোলেন। তিনি তো মন্ত্রী নন! মায়ের পক্ষে এত বোঝা সম্ভবও নয়। তবে আমি কোনও দিন রেশন তুলিনি।’’

এর পর দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যর দিকেও আঙুল তোলেন শান্তনু। তিনি বলেন, ‘‘আমি এমনও দেখাব, যাঁরা বিলো ক্যাটাগরি, তাঁদের বড় কার্ড। পুরুষ কার্ডে মহিলা হয়ে গিয়েছে। তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কী করেছেন, বার করা হোক। কত ধানে কত চাল, দেখা হোক।’’ এর পরেই শান্তনু জানিয়ে দেন, তিনি কার্ড ‘সারেন্ডার’ করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘অবশ্যই কার্ড সারেন্ডার করব। আগে জানতামই না। শান্তনু কতটা সঠিক, সেটা তাঁর বলার দরকার নেই। বনগাঁর মানুষ বলবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement