বিকাশ সিংহ এবং উত্তম সর্দার। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালিকাণ্ডে ধৃত বিজেপির বিকাশ সিংহ এবং তৃণমূল থেকে বহিষ্কার হওয়া নেতা উত্তম সর্দারকে দ্বিতীয় বার গ্রেফতারির পর চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিলেন বিচারক। সন্দেশখালিতে পৃথক অভিযোগে গত শনিবার গ্রেফতার হন বিকাশ এবং উত্তম। সোমবার তাঁদের আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক জামিন দেন দু’জনকেই। কিন্তু তার কিছু ক্ষণ পর আদালতের সামনে থেকে বিকাশকে আবার গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে বসিরহাট থানার পুলিশ গাড়িতে তুলতে গেলে বিজেপি নেতার পরিবারের সদস্য এবং দলীয় কর্মীরা বাধা দেন। উত্তেজনা তৈরি হয়। তার মধ্যেই শেষমেশ বিকাশকে নিয়ে থানায় চলে যায় পুলিশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি। এর কিছু ক্ষণ পর শোনা যায় জামিনে মুক্ত উত্তমকেও আবার গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার রাতে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে রাজ্যপুলিশ জানায়, সন্দেশখালির ঘটনায় ধৃত উত্তম এবং বিকাশকে হেফাজতে চাওয়া হয়নি বলে যে তথ্য ছড়িয়েছে, তা ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ এবং ‘বিভ্রান্তিকর’। পুলিশের দাবি, সোমবার দু’জনকেই ১০ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে চাওয়া হয়। কিন্তু আদালত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে। পুলিশ এ-ও জানায়, ওই দু’জনের গত কয়েক দিনে সন্দেশখালিতে নথিভুক্ত বেশ কয়েকটি গুরুতর ফৌজদারি মামলায় রয়েছে।
মঙ্গলবার দু’জনকে আদালতে তোলা হলে পুলিশ তাঁদের সাত দিনের হেফাজতের আবেদন করে। তবে সওয়াল-জবাবের পর চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় বসিরহাট মহকুমা আদালত।
সন্দেশখালিতে অশান্তিতে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে শনিবার গ্রেফতার হন বিজেপি নেতা বিকাশ। তিনি ছিলেন বসিরহাট বিজেপি সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি। বর্তমানে তিনি বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির পর্যবেক্ষক। সন্দেশখালি থানার সামনেই তাঁর বাড়ি। অন্য দিকে, শাহজাহান শেখ এবং তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ নেতা শিবু হাজরা আর উত্তমের বিরুদ্ধে এলাকায় ‘অত্যাচার’-এর অভিযোগ রয়েছে। যে অভিযোগে গত কয়েক দিন ধরে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা তাঁদের গ্রেফতারির দাবি তুলেছিলেন। ঘটনাক্রমে শনিবার দুপুরে রেড রোডে তৃণমূলের ধর্নামঞ্চ থেকে পার্থ ভৌমিক ঘোষণা করেছিলেন, আগামী ছ’বছরের জন্য তাঁদের দল থেকে উত্তমকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। তার অব্যবহিত পর উত্তম গ্রেফতার হন।