প্রতীকী ছবি
দোকানপাট বন্ধ। তাই চোরাগোপ্তা বিক্রি হচ্ছে মদ। প্রকাশ্যে বসে শারীরিক দূরত্বের বিধি শিকেয় তুলে লকডাউনের মধ্যে কোথাও কোথাও মদের আসরও বসছে।
কোথা থেকে আসছে মদ? কী করছে পুলিশ--উঠছে এই সব প্রশ্ন। এই পরিস্থিতিতে মদ খেয়ে শুক্রবার বাদুড়িয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে কুপিয়ে খুনও করেছে।
বসিরহাট শহরে তবুও পুলিশের নজরদারি রয়েছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে প্রকাশ্যে মদ, গাঁজার আসর বসছে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, মদ বিক্রির জন্য রবিবার পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৪৬২০ লিটার দেশি মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। লকডাউন অমান্য করার অপরাধে প্রায় সাড়ে ৩ শো জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বসিরহাট পুলিশ জেলার অন্যান্য থানা এলাকায় ৫০০ লিটার মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মদ বিক্রির জন্য প্রায় একশো জনকে এবং লকডাউন ভাঙার কারণে প্রায় ৪০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বনগাঁ শহরের পথঘাট দেখে এমনিতেই বোঝার উপায় নেই, লকডাউন চলছে। জায়গায় জায়গায় বেশ ভিড় চোখে পড়ছে। মোটরবাইক, টোটো-অটো, ভ্যান, ইঞ্জিন ভ্যান, ছোট গাড়ি সবই চলছে। সন্ধ্যার পর পাড়ায় বসছে মদের আসর। ভিড়ের একই ছবি দেখা যাচ্ছে ব্যারাকপুর শহরতলিতেও। প্রকাশ্যে না হলেও আড়ালে-আবডালে মদ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে এখানেও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউন ঘোষণার পরে ব্যবসায়ীদের বড় অংশ রাতারাতি হাজার হাজার লিটার দেশি, বিদেশি মদ কালোবাজারিদের হাতে তুলে দেয়। যা বর্তমানে দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ৮৫ টাকার দেশি মদের বোতল ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪২০ টাকা বিদেশি মদের বোতল ১২০০-১৩০০ টাকায় বিকোচ্ছে। বাগদা থানার পুলিশ শনিবার রাতে দেশি মদ সহ এক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে।
মদ্যপায়ীদের একাংশের আবার যুক্তি, মদ বাজারে সঠিক দামে নিয়মিত পাওয়া গেলে বরং অনেকে ঘরে বসে সে দিকে মন দেবেন। তাতে রাস্তায় ভিড় কমবে। সরকারের ঘরেও রাজস্ব আসবে। কিন্তু এ সব যুক্তি পুলিশ-প্রশাসনের কাছে গ্রাহ্য হওয়ার মতো নয়। ফলে চলছে ধরপাকড়।
সমস্যা আছে আরও। রবিবার নীলের পুজো উপলক্ষে ফুল-ফলের দোকানগুলিতে অতিরিক্ত ভিড় ছিল। ক্যানিং, তালদি, বাসন্তী, গোসাবা বাজারে ছিল মানুষের ভিড়। অধিকাংশ সময় খোলা থাকছে ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজার, ভাঙড় বাজার, ঘটকপুকুর বাজার পোলেরহাট বাজার, পাকাপোল বাজারের অধিকাংশ দোকান। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙড়ের ওই সব বাজারে সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের সেই নির্দেশকে অমান্য করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান ছাড়াও অধিকাংশ দোকান খুলে রাখা হচ্ছে। বিনা প্রয়োজনে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন বাজারে আড্ডা দিতে। এলাকায় পুলিশের গাড়ি ঢুকতে দেখলে সবাই দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়ে লুকিয়ে পড়ছে। বিকেল হতেই ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকায় ফুটবল নিয়ে মাঠে নেমে পড়ছে এলাকার যুবকের দল। মাঝে মাঝে পুলিশের তাড়া খেয়ে তারা পালিয়ে যাচ্ছে।