Firecracker

লকডাউনের জেরে সমস্যায় হাড়ালের বাজি ব্যবসায়ীরা

বাজি তৈরির সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় মানুষ জানান, প্রতিবছর চৈত্র মাস থেকেই এখানকার বাজি বাজারে ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়৷

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

চম্পাহাটি শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০১:২১
Share:

রোদে দেওয়া হচ্ছে বাজি। ফাইল চিত্র

বাজি শিল্পের জন্য রাজ্য জুড়েই খ্যাতি রয়েছে চম্পাহাটির হাড়ালের। আগে প্রচুর পরিমাণে শব্দবাজি তৈরি হত এই এলাকায়। তবে এখন সরকারি নিষেধাজ্ঞার ফলে নানা ধরনের আলোর বাজি তৈরি হয়। পূজা-পার্বণ থেকে শুরু করে বিয়ে বাড়ি— এখানকার বাজির চাহিদা সব জায়গাতেই। কিন্তু লকডাউনের ফলে এই বাজি শিল্পেই দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ উৎপাদন। সমস্যায় পড়েছেন এই পেশার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কয়েক হাজার মানুষ।

Advertisement

বাজি তৈরির সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় মানুষ জানান, প্রতিবছর চৈত্র মাস থেকেই এখানকার বাজি বাজারে ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়৷ বৈশাখের শুরু থেকেই বিভিন্ন কারখানায় অর্ডার আসতে শুরু করে। বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঁচামালও আসত এই বৈশাখ মাস থেকেই। মূলত পুজোর সময় যে বাজি পাওয়া যায় তা তৈরির কাজ শুরু হয় এখন থেকেই। পাশাপাশি বিয়ের মরসুমেও বাজির বরাত আসে। কিন্তু লকডাউনের ফলে সব বন্ধ। কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। সকলেই গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার পেটের তাগিদে আনাজ, মাছ, ফলের ব্যবসা শুরু করেছেন।

বাজি ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর ব্যবসা করে যে লাভ হয়েছিল, সেই টাকাতেই চলছে সংসার৷ কিন্তু সেই জমানো অর্থও প্রায় শেষের মুখে৷ একটানা লকডাউন ও কাঁচামালের অভাবে ইতিমধ্যে ধুঁকতে শুরু করেছেন বাজি ব্যবসায়ীরা৷ প্রতি বছর এই সময়টাতে তাঁরা ব্যবসায় জন্য টাকা লগ্নি করতেন৷ পুজোর মরসুমেই মূল উপার্জন হত৷ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজো, কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো কী ভাবে হবে তা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে৷ পুজো হলেও সাধারণ মানুষের হাতে আদৌ বাজি কেনার টাকা থাকবে কিনা, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে৷

Advertisement

লকডাউনের জন্য বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ। গত দুমাসে কোথাও কোনও ফুটবল বা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ও অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে গোডাউনে মজুত থাকা বাজিও বিক্রি হয়নি। এই অবস্থায় কার্যত দিশেহারা এখানকার বাজি শ্রমিক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা৷

আপাতত সংগঠনের পক্ষ থেকে বাজি শ্রমিকদের চাল, ডাল আলু দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ভাবে কতটা পরিস্থিতির উন্নতি হবে তা নিয়ে সংশয়ে সকলেই৷

বাজি ব্যবসায়ী অর্জুন মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রতিবছর এই সময়ে আমাদের চরম ব্যস্ততা থাকে। চৈত্র, বৈশাখের প্রখর রোদে শোকাতে পারলে ভাল মানের বাজি তৈরি হয়। কিন্তু এ বার লকডাউনের জেরে বাজি তৈরির কারখানা ও বাজির বাজার বন্ধ। বিয়ে ও খেলার মরশুমের জন্য যা বাজি মজুত করেছিলাম সেগুলিই বিক্রি হয়নি।”

চম্পাহাটি হাড়াল বাজি ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য শঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘উৎপাদন বন্ধ, বিক্রিও বন্ধ। খুবই খারাপ অবস্থা।’’ আর এক বাজি ব্যবসায়ী সুধাংশু দাসের মতে, লকডাউন উঠে গেলেও বাজির বাজার এখনই ভাল হবে না। কারণ, মানুষের হাতে টাকাপয়সা থাকবে না। ফলে বাজির বাজার আবার কবে যে ঠিক হবে, তা বলা যাচ্ছে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement