ইউনুস মোল্লা। —নিজস্ব চিত্র
ছোটবেলায় আগুনে পুড়ে বাঁ-হাতটা পঙ্গু হয়ে যায়। হাতে তেমন জোর নেই। শারীরিকভাবেও অসুস্থ। স্ত্রী,দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে সংসার। ভ্যান রিকশা চালিয়ে অতি কষ্টে দিন কাটে। লকডাউনের জেরে এখন বাইরে বের হতে পারছি না। রিকশা নিয়ে বেরোলেই পুলিশ তাড়া করছে। এ দিকে, জমানো সামান্য কিছু টাকা দিয়ে প্রথম কয়েকটা দিন কোনও রকমে কেটে গিয়েছে। এখন টাকা পয়সা সব শেষ। রিকশা নিয়ে না বেরোলে দু’পয়সা রোজগার হবে না।
এই পরিস্থিতিতে কী করব, বুঝতে পারছি না। কবে সব কিছু স্বাভাবিক হবে কেউ বলতে পারছেন না। বাজার-হাট সব বন্ধ। কেউ ধারে চাল, ডাল, আলু দিতে চাইছে না। রেশনের চাল ছাড়া সরকারি কোনও সাহায্য নেই। পাড়া পড়শিদের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে কোনও রকমে চলছে। দু’বেলা পেটভরে দু’মুঠো খাবারও জুটছে না। মাঠ থেকে শাক তুলে নিয়ে এসে ভাতের সঙ্গে সেদ্ধ করে খাচ্ছি।
আমাদের কষ্ট দেখে পড়শি রিজিয়া বেগম ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল কিনে দিয়েছেন। ওই সামান্য সাহায্যটুকু আর কত দিন চলবে। আমার চিকিৎসার খরচও রয়েছে। সংসারে আমি ছাড়া হাল ধরার কেউ নেই। সব কিছু স্বাভাবিক না হলে পরিবারের সকলকে নিয়ে না খেতে পেয়ে মরতে হবে। এ ভাবে কতদিন চেয়েচিন্তে চলবে? এ রকম চলতে থাকলে হয় তো শেষ পর্যন্ত রোজগারের একমাত্র সম্বল ভ্যান রিকশাটাই বিক্রি করে দিতে হবে। এ রকম পরিস্থিতিতে আমাদের মতো গরিব মানুষদের জন্য সরকারি ভাবে কোনও অনুদানের ব্যবস্থা হলে খুব উপকার হত।