গোবরডাঙা হাসপাতাল।
কোভিড হাসপাতালের দাবি উঠল গোবরডাঙায়। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মেন্টর গোপাল শেঠ ওই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে চিঠি দিয়েছেন।
গোপাল বলেন, ‘‘গোরবডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটি কোভিড হাসপাতাল হিসাবে তৈরি হলে বনগাঁ মহকুমা, হাবড়া, অশোকনগর, স্বরূপনগর, বাদুড়িয়ার কয়েক লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। এই সব এলাকা থেকে গোবরডাঙা হাসপাতালের দূরত্ব কম। ফলে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যাবে। তা ছাড়া, হাসপাতালের পরিকাঠামো নতুন করে তৈরি করতে হবে না। চিকিৎসক নার্স ও যন্ত্রপাতি থাকলেই চালু করা সম্ভব হবে।’’
এই প্রস্তাবকে সমর্থক করেছে গোবরডাঙা পুরসভা। পুরসভার পুরপ্রশাসক বোর্ডের সদস্য শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘এখানে কোভিড হাসপাতাল তৈরি হোক, আমরাও চাই। সব রকমের সহযোগিতা আমরা করব। বহির্বিভাগের চিকিৎসা আমরা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাব। মানুষ উপকৃত হবেন। এখনও পর্যন্ত পুর এলাকায় ২১ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।’’
২০১৪ সালের ৪ নভেম্বর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালের রোগী ভর্তির ব্যবস্থা বা ইনডোর বিভাগ। তারপর থেকে ধীরে ধীরে চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। একজন চিকিৎসক সপ্তাহের তিন-চার দিন বহির্বিভাগে রোগী দেখতেন। হাসপাতালটি জেলা পরিষদ পরিচালিত। হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ রূপে চালু করার দাবিতে শহরবাসী সরব হন। শহরবাসীর সেই দাবি অবশ্য আজও মেটেনি।
২০ ফেব্রুয়ারি গোবরডাঙা হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা পরিষেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা পরিষদ। পরিষদ জানায়, হাসপাতালটির দায়িত্বভার জেলা পরিষদের হাত থেকে মিউনিসিপ্যাল অ্যাফ্যায়ার্স দফতরকে দেওয়া হবে। যতদিন তারা দায়িত্ব ভার না নিচ্ছে তত দিন জেলাপরিষদ হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা পরিষেবা চালু করবে। হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ১০টি শয্যা দেওয়া হচ্ছে বলেও ঘোষণা করা হয়। পরে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর হাসপাতালটির দায়িত্ব নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রূপে চালু করবে। এপ্রিল মাস থেকে হাসপাতালে বহির্বিভাগ চালু হয়েছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চিকিৎসকেরা বহির্বিভাগে রোগী দেখছেন। কিছু ওষুধপত্র দেওয়া হচ্ছে। রাতে অবশ্য কোনও চিকিৎসক থাকেন না। পরিষেবাও মেলে না। করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে, বিশেষ করে রাতে মানুষকে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালের বেহাল পরিষেবার উন্নতির দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছে গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদ। সংগঠনের সহ সভাপতি পবিত্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটি কোভিড হাসপাতাল হিসাবে সরকার চালু করলে আমাদের আপত্তি নেই। তবে এখন হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে যে চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে, তা বজায় রাখতে হবে। করোনা পরিস্থিতি কাটলে হাসপাতালটি যেন বন্ধ হয়ে না যায়, তা দেখতে হবে। এটিকে স্টেট জেনারেল হাসপাতাল হিসাবে গড়ে তুলতে হবে।’’ বিজেপির গোরবডাঙা শহর পৌর মণ্ডলের সভাপতি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে এখন চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায় না। কোভিড হাসপাতাল তৈরি হলে এবং এখান থেকে লালারস পরীক্ষার ব্যবস্থা হলে আমাদের আপত্তি নেই।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)