প্রতীকী চিত্র।
দিনের পর দিন করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে ক্যানিং মহকুমায়। ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই মহকুমায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা সংক্রমণকে প্রতিহত করতে ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে ক্যানিং মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর।
লকডাউনের শুরু থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত চার মাসে ক্যানিং মহকুমায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রায় দেড়শো মানুষ। কিন্তু গত আড়াই মাসে নতুন করে আরও প্রায় বারোশোজন আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। শনিবারের হিসেব অনুযায়ী, এই মহকুমায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা ১৩৭৯। প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন আক্রান্ত হচ্ছেন মহকুমায়।
ক্যানিং মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে ক্যানিং ১, ক্যানিং ২, বাসন্তী ও গোসাবা ব্লকে প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে সংক্রমণ। বর্তমানে ক্যানিং ১ ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩৭ জন। এর মধ্যে ১৩৩ জন এখনও পজ়িটিভ রয়েছেন। ৯ জনের মৃত্যু হলেও বাকিরা চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়েছেন। বাসন্তী ব্লকে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৯ জন। যার মধ্যে ২৪৬ জন ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়েছেন। ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও এই ব্লকে অসুস্থ রয়েছেন ৬৭ জন। ক্যানিং ২ ব্লকে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৪২। এই ব্লকের ৪১ জন এখনও অসুস্থ, বাকিরা চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়েছেন।
গোসাবা ব্লকে, যেখানে প্রথম থেকেই সংক্রমণ যথেষ্ট কম ছিল, সেখানেও ইতিমধ্যেই ১৮১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ৭৪ জন ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়েছেন, তবে এখনও ১০৮ জন অসুস্থ রয়েছেন এই ব্লকে। মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। ইতিমধ্যেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল, মহকুমাশাসকের দফতর-সহ একাধিক সরকারি দফতরের কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট ক্যানিং কোভিড হাসপাতালের বেশির ভাগ শয্যাই ভর্তি রয়েছে। রবিবার সকাল পর্যন্ত ৪১ জন ভর্তি হয়েছেন এই হাসপাতালের সাধারণ শয্যায়। অন্য দিকে, ৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন সিসিইউতে। মহকুমার একমাত্র সেফ হোম ক্যানিং ২ ব্লকের ঝোড়োর মোড়ে ৮০ জন রোগীর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। ৬০-৬৫ জন রোগী প্রতিদিনই ভর্তি থাকছেন এখানে। এ ছাড়াও বাসন্তী ও ক্যানিং ১ ব্লকের জন্য সেফ হোম তৈরি রাখা হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়লে এগুলিকে চালু করা হবে বলে জানিয়েছে মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর। ক্যানিং মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যাঁদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা রয়েছে, তাঁদের কোভিড হাসপাতালে ও যাঁদের উপসর্গ রয়েছে তাঁদের সেফ হোমে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। অন্য দিকে, যাঁদের শরীরে কোনও উপসর্গ নেই, তাঁদের বাড়িতেই নিভৃতবাসে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’’
কোভিড হাসপাতালের মতো সেফ হোমেও ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখছেন। কারও অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের দ্রুত কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।