ফাইল চিত্র
করোনা আক্রান্ত দুই ব্যক্তির মৃত্যু হল বনগাঁ শহরে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সোম ও মঙ্গলবার যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের একজনের বয়স ৮৪ বছর। অন্যজনের ৫৮। একজন মারা গিয়েছেন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে, অন্যজন মারা গিয়েছেন কোভিড হাসপাতালে। এখনও পর্যন্ত বনগাঁ শহরে করোনা আক্রান্ত রোগী মারা গেলেন ১২ জন। রোজই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। অথচ কোনও রকম স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে বাজারহাটে বের হচ্ছেন অনেকে। মাস্ক দেখা যাচ্ছে না অনকের মুখে। বা থাকলেও তা ঝুলছে থুতনির নীচে। চায়ের দোকানে আড্ডাও চলছে জমিয়ে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত বনগাঁ শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭১৪ জন। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১৩৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ৫৬৩ জন। উপসর্গ থাকা মানুষ বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য দিচ্ছেন। সরকারি নিয়ম, লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সেই বাড়িতে হোম আইসোলেশনে থাকতে হবে। কিন্তু অনেকেই রিপোর্ট আসার আগে বাইরে বেরিয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ। এমন ঘটনাও ঘটছে, আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়িতে থাকলেও বেরিয়ে পড়ছেন পরিবারের লোকজন।
লালারস দেওয়ার পরে রিপোর্ট আসা পর্যন্ত কেউ বাড়িতে থাকছেন কিনা, তার উপরে কোনও নজরদারি নেই। এ দিকে, লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে তিন-চার দিন সময় লেগে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এর ফলেও মানুষ অধৈর্য হয়ে বেরিয়ে পড়ছেন বাইরে।
শহরের এক যুবক ৭ অক্টোবর মহকুমা হাসপাতালে লালারস পরীক্ষার জন্য দিয়েছিলেন। রিপোর্ট আসে ১১ অক্টোবর। সেই যুবক অবশ্য সচেতনতা পরিচয় দিয়ে বাড়িতেই ছিলেন। চিকিৎসককে দেখিয়ে ওষুধপত্র খাওয়া শুরু করেন। বনগাঁর পুরপ্রশাসক শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ার কারণে অনেকে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে বলেছি, দ্রুত রিপোর্ট আসার ব্যবস্থা করতে। তবে মানুষকেও সচেতন হতে হবে।’’ সেই ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন এক স্বাস্থ্যকর্তা। বুধবার একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে মাস্ক ছাড়া পথে বের হওয়া লোকজনকে বিনামূল্যে মাস্ক দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের পক্ষে সংকর্ষণ আচার্য বলেন, ‘‘এর পরেও হয় তো দেখব, যাঁদের মাস্ক দিলাম, তাঁরা মাস্ক ছাড়াই বেরোচ্ছেন। মানুষ সচেতন না হলে সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না।’’ পুরপ্রশাসক বলেন, ‘‘মাস্ক না পরার বিরুদ্ধে পুলিশ, পুরসভা যৌথ অভিযান করছে। তবে পুলিশকে আরও তৎপর হতে হবে। মানুষকেও বুঝতে হবে, নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার জরুরি।’’