—প্রতীকী চিত্র।
অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার সহযোগিতায় আয়োজিত নাট্য উৎসবে উপ পুরপ্রধান তথা অশোকনগরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায়ের অনুপস্থিতি ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
অশোকনগর নাট্য উৎসব কমিটির উদ্যোগে শহিদ সদনে ২৬ নভেম্বর শুরু হয়েছিল উৎসব। চলে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। উদ্বোধনে এসেছিলেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা মোশারফ করিম। এ ছাড়াও ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। উৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা, অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী।
নাট্য উৎসবে বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারকে ফের নির্বাচিত করার আবেদন জানিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্কে জড়িয়েছেন ব্রাত্য। উপ-পুরপ্রধানের আমন্ত্রণ না পাওয়া নিয়েও শুরু হয়েছে তরজা। এই ঘটনায় স্থানীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই প্রকাশ পেল বলে মনে করছেন অনেকে।
ধীমান বলেন, “আমাকে নাট্য উৎসবের আমন্ত্রণ করা হয়নি। কেবল নাট্য উৎসব নয়, ইদানীং দলের কোনও কর্মসূচিতেই আমাকে ডাকা হয় না।” সম্প্রতি জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় ভরকুন্ডা পঞ্চায়েত এলাকায় একটি পুজো উদ্বোধনে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল ধীমানকে। সেখানে আবার তৃণমূলের ব্লক সভাপতিকে আমন্ত্রণ করা হয়নি বলে অভিযোগ।
তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ধীমানের সঙ্গে নারায়ণের দূরত্বের কারণেই এই পরিস্থিতি। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের তরফে প্রার্থী হিসাবে ধীমানের নাম ঘোষণা করা হয়। ধীমান প্রচারও শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব ধীমানকে সরিয়ে নারায়ণকে প্রার্থী করেন। তারপর থেকে সময় যত গড়িয়েছে, ততই দু’জনের দূরত্ব বেড়েছে। বিভিন্ন সময়ে তা প্রকাশ্যে আসছে।
ধীমানকে আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে নারায়ণ বলেন, “নাট্য উৎসবে আমন্ত্রণ করার বিষয়টি আমার হাতে ছিল না। ওটা পুরসভা করেছে। তবে সকলকেই আমন্ত্রণ করা হয়েছিল বলে আমি জানি।” অশোকনগর-কল্যাণগড়ের পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বলেন, “নাট্য উৎসবে আলাদা করে কাউকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। পুরসভার কাউন্সিলরদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে উৎসব নিয়ে আলোচনার জন্য সকলকে আসতে বলা হয়েছিল। ধীমান আসেননি। বিধায়কের সঙ্গে আমরা সকলে আলোচনা করেছিলাম ধীমানকে ছাড়াই।”
অশোকনগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর সত্যসেবী কর আবার বলেন, “বিপুল অর্থ ব্যয় করে যে উৎসবের আয়োজন করা হল, সেই অর্থের উৎসই স্বচ্ছ নয়।” অভিযোগ অস্বীকার করে পুরপ্রধান বলেন, “বিপুল ব্যয়ে নাট্য উৎসবের আয়োজন করা হয়নি। যাঁরা কার্ড নিয়েছিলেন, তাঁরা কিছু অনুদান দিয়েছেন। বাইরের কারও কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নেওয়া হয়নি।”