এই বাড়িতেই ভাড়া থাকতেন উদ্ভব সরকার। নিজস্ব চিত্র
নার্সিং পড়ুয়ার মৃত্যুতে সহপাঠীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করল পরিবার। সোমবার নিহত যুবকের জ্যাঠা অরুণ সরকার অশোকনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
উদ্ভব সরকার নামে বছর কুড়ির ওই যুবকের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার যাদববাটি এলাকায়। অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে সরকারি নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের প্রথম বর্ষে পড়তেন। পয়লা নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল ক্লাস। কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন তাঁরা। রবিবার দুপুরে সেই বাড়িরই ঘরে, খাটের নীচ থেকে উদ্ভবের রক্তাক্ত দেহ মেলে।
সোমবার অশোকনগরে আসেন উদ্ভবের জ্যাঠা ও এলাকার নন্দনপুর পঞ্চায়েতের সদস্য মহাদেব বর্মণ। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ভবের সহপাঠী, তথা রুমমেট বিক্রম সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিক্রমের বাড়ি গঙ্গারামপুরেই।
মহাদেব জানান, বিক্রমের মা ঊর্মিলা গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতির নারী ও শিশুকল্যাণ কর্মাধ্যক্ষ। ঘটনার পর থেকে বিক্রম অবশ্য বাড়ি ফেরেননি। তাঁর ফোন বন্ধ। ফোন বন্ধ ঊর্মিলারও।
উদ্ভবের জ্যাঠা বলেন, ‘‘পড়তে এসে এ ভাবে ছেলেটা খুন হয়ে যাবে, ভাবতেও পারছি না। পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করে খুনিকে গ্রেফতার করুক।’’ উদ্ভবের বাবা দিলীপ বলেন, ‘‘আমার ছেলের সঙ্গে একই রুমে থাকত বিক্রম। ঘটনার রাতে ওদের মধ্যে কথা কাটাকাটিও হয়। তার পরে এই ঘটনা ঘটেছে। ও খুন না করলে কেনই বা লুকিয়ে থাকবে?’’
বারাসতের পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’’ সোমবার সন্ধ্যায় উদ্ভবের দেহ নিয়ে গঙ্গারামপুর রওনা দেন পরিবারের লোকজন।
রবিবার দুপুরে তালাবন্ধ ঘর থেকে উদ্ভবের দেহ মেলে। বিক্রম তাঁর সঙ্গে রাতে ছিলেন বলেই জানাচ্ছেন স্থানীয় অনেকে। রবিবার সকাল থেকে অবশ্য বেপাত্তা তিনি। ঘর থেকে ব্যাগ নিয়ে তাঁকে বেরোতে দেখেছেন বাড়িওয়ালা। বিক্রম বলেছিলেন, দাদার বিয়ে উপলক্ষে বাড়ি যাচ্ছেন।
উদ্ভবের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বাবা দিলীপ পেশায় চাষি। তিন ছেলেমেয়ে। উদ্ভব বড়। উদ্ভব নার্সিং নিয়ে পড়াশোনা করে নার্সিং শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। বিডিও হওয়ারও স্বপ্ন ছিল বলে জানালেন পরিজনেরা। কালীপুজোর আগে এক তরুণীর সঙ্গে তাঁর রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়েছিল। ওই তরুণীও জানিয়েছেন রাতে বিক্রম ও উদ্ভব এক সঙ্গে ছিলেন। দু’জনের মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল বলেও জানতেন তরুণী। পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে।