Sunderbans

Sunderbans: সর্দিজ্বর-পেটখারাপ ছাড়া প্রায় কিছুরই চিকিৎসা মেলে না

বহু আবেদন-নিবেদনের পরেও অন্তর্বিভাগ তো চালু হলই না, চিকিৎসক বা নার্সের সংখ্যাও বাড়েনি।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

বাসন্তী  শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২২ ০৯:১০
Share:

মাঝে মধ্যেই বন্ধ থাকে হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র

প্রায় কুড়ি বছর আগে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার ঝড়খালিতে তৈরি হয়েছিল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু এখনও জরুরি বিভাগ বা অন্তর্বিভাগ চালু হল না। সপ্তাহে দু’তিনদিন বহির্বিভাগ চলে। তাতেও চিকিৎসকেরা ঠিকমতো আসেন না বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষের। একজন নার্স, একজন ফার্মাসিস্ট ও একজন ডাক্তারকে নিয়ে কোনও মতে চলছে পরিষেবা।

Advertisement

বহু আবেদন-নিবেদনের পরেও অন্তর্বিভাগ তো চালু হলই না, চিকিৎসক বা নার্সের সংখ্যাও বাড়েনি। সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশি, পেট খারাপ ছাড়া বিশেষ কিছুর চিকিৎসা মেলে না বলে জানালেন স্থানীয় মানুষ।

এই পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষের মূল ভরসা বলতে ২৫ কিলোমিটার দূরে বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল বা ৪৫ কিলোমিটার দূরের ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রসব বেদনা নিয়ে এতটা রাস্তা অতিক্রম করে হাসপাতালে যাওয়ার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা দেখা দেয়।

Advertisement

সুন্দরবন এলাকায় বাঘ-কুমিরের আক্রমণ লেগেই থাকে। কিন্তু সে সবের চিকিৎসা মেলে না এই হাসপাতালে।

স্থানীয় বাসিন্দা সুকদেব সর্দার, বিজন সানারা জানান, বছরের পর বছর ধরে হাসপাতালের ভবন পড়ে রয়েছে। অথচ, পরিকাঠামোর উন্নয়ন করা হচ্ছে না। এলাকার মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছেন।

স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিধান বায়েন বলেন, “এই হাসপাতাল থেকে যাতে মানুষ আরও ভাল পরিষেবা পেতে পারেন, সব সময়ে যাতে ডাক্তার, নার্স থাকেন, অন্তর্বিভাগ, জরুরি বিভাগ চালু করা হয়— সে জন্য অনেক আবেদন-নিবেদন করেছি। কিন্তু এখনও কাজ কিছুই হয়নি।”

রাজ্য সরকার যখন খেলা-মেলা বা দুর্গাপুজোয় উদ্যোক্তাদের জন্য মোটা টাকা বরাদ্দ করতে পারে, তা হলে কেন প্রত্যন্ত এই গ্রামগুলিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতিতে নজর দেবে না, উঠছে সেই প্রশ্ন।

বাসন্তীর প্রাক্তন বিধায়ক তথা আরএসপি নেতা সুভাষ নস্কর বলেন, “বাম আমলে ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হয়েছিল। তখন প্রতিদিন চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট থাকতেন। এখন বেশিরভাগ সময়েই চিকিৎসক, নার্সের অভাবে হাসপাতাল বন্ধ থাকে। পুজো উদ্যোক্তাদের হাজার হাজার টাকা না দিয়ে গ্রামাঞ্চলের এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন করলে ভাল হত। মানুষের উপকারে লাগত।” বিজেপি নেতা বিকাশ সর্দারের কথায়, “ভোটের রাজনীতিতে এই সব পুজো উদ্যোক্তা, ক্লাব, সংগঠনগুলিকে হাতে রাখতে সরকারি টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা বেহাল এ রাজ্যে। চাকরি নেই। সে সব না দেখে অন্য কাজে টাকা বিলানো হচ্ছে।”

বাসন্তী ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমন হালদার জানান, চিকিৎসকের অভাবে প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। নতুন চিকিৎসক কাজে যোগ দিলেই সমাধান হয়ে যাবে।” বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বলেন, ‘‘যাতে এই হাসপাতাল থেকে মানুষ আরও ভাল চিকিৎসা পরিষেবা পান, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement