—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাসন্তীর পরে এ বার পাথরপ্রতিমা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের জাল সই-সহ ভুয়ো নিয়োগপত্র নিয়ে এ বার পাথরপ্রতিমার মহেশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে যোগ দিতে আসার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় শিক্ষক নিয়োগে কোনও অসাধু চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে কি না, সেই প্রশ্ন ফের উঠছে। একই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদরে কর্তারাও।
স্কুল সূত্রের খবর, গত ১৬ অক্টোবর সেখানে শিক্ষক পদে যোগ দিতে আসেন দক্ষিণ কাশীনগর গ্রামের এক যুবক। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেবাশিস করকে নিয়োগপত্র দেখান তিনি। প্রাথমিক ভাবে নিয়োগপত্র দেখে সন্দেহ হয় দেবাশিসের। নিয়ম মতো পরের দিন, ১৭ অক্টোবর ওই নিয়োগপত্র নিয়ে স্থানীয় স্কুল পরিদর্শকের কাছে নথিভুক্ত করাতে যান প্রধান শিক্ষক। নিয়োগপত্রটি দেখে সন্দেহ হয় স্কুল পরিদর্শক চৈতন্যদেহ সাহারও। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ থেকে পাঠানো হলেও কিছু ত্রুটি স্কুল পরিদর্শকের নজরে আসে। নিয়োগপত্রটির ছবি তুলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ও তার চেয়ারম্যানের কাছে পাঠান তিনি। তাতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, নিয়োগপত্রটি জাল।
সংসদ সূত্রের খবর, ২০০৯ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জেলাভিত্তিক পরীক্ষা হয়েছিল। দীর্ঘ আইনি জটিলতা কাটিয়ে সম্প্রতি সেই পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় দেড় হাজার জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপত্র নিয়ে তাঁরা সংশ্লিষ্ট স্কুলে যোগ দিচ্ছেন। পাথরপ্রতিমার স্কুলে যোগ দিতে আসা যুবকও নিজেকে ২০০৯ সালের পরীক্ষার্থী বলেই দাবি করেন।
কিন্তু ভুয়ো নিয়োগপত্র এল কোথা থেকে?
সংসদের আধিকারিকদের সন্দেহ, এর পিছনে রয়েছে কোনও অসাধু চক্র। তারাই জেলা প্রাথমিক বোর্ডের চেয়ারম্যানের সই নকল করে মোটা টাকার বিনিময়ে বেকার যুবক-যুবতীদের হাতে ভুয়ো নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছে। নিয়োগপত্র নিয়ে স্কুলে যাওয়ার পরই চাকরিপ্রার্থীরা বুঝতে পারছেন, তাঁরা ফেঁসে গিয়েছেন।
সংসদ সূত্রের খবর, শুধু পাথরপ্রতিমায় নয়, জেলার একাধিক জায়গা থেকেই এ রকম ভুয়ো নিয়োগপত্রের খবর সামনে এসেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান অজিত নায়েক বলেন, “সম্প্রতি বাসন্তী দক্ষিণ চক্রে ভুয়ো নিয়েগপত্র নিয়ে স্কুলে যোগ দিতে যান এক মহিলা। পাথরপ্রতিমাতেও একই ঘটনা ঘটল। একটি অসাধু চক্র কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে বলব, সাবধান থাকার জন্য। কিছু লোকজন সই নকল করে ভুয়ো নিয়োগপত্র তৈরি করছে। এর সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কোনও সম্পর্ক নেই।”
ভুয়ো নিয়োগপত্র নিয়ে স্কুলে যোগ দিতে আসা ওই যুবকের বিরুদ্ধে অবশ্য এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অজিত জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেই মতো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। যুবকের বাবার দাসের দাবি, “আমার ছেলে চক্রান্তের শিকার হয়েছে। ও যাকে টাকা দিয়েছিল, সে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।”