খালের উপরে এ ভাবেই গজিয়ে উঠেছে কিছু নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র
জল নিকাশি খাল বুজিয়ে নির্মাণের অভিযোগ উঠল ভাঙড়ের হাতিশালা এলাকায়। তৃণমূলের একাংশের মদতেই বেআইনি নির্মাণ চলছে বলে অভিযোগ। সে কথা অস্বীকার করেছেন শাসক দলের নেতারা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকার এক হোটেল ব্যবসায়ী গাবতলা খালের একাংশ জবরদখল করে মাটি ভরাট করে দোকান ঘর বানিয়েছেন। খালের একাংশ বুজিয়ে দোকানের আবর্জনাও ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
গাবতলার ওই খালটি ভোজেরহাটের বাগজোলা খালের সঙ্গে মিশেছে। এলাকার জল নিকাশির অন্যতম প্রধান মাধ্যম এই গাবতলা খাল। ওই খালের জলের উপরে অনেকটাই নির্ভর করে এলাকার চাষবাস। খাল বুজিয়ে ফেলার ফলে এলাকার চাষবাসে প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন স্থানীয় চাষিরা।
খালে আবর্জনা জমে এলাকায় মশা-মাছির উপদ্রবও বাড়ছে বলে অভিযোগ। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকের অভিযোগ, শাসক দলের একাংশের মদতে অনৈতিক কাজ করছেন ওই ব্যবসায়ী। প্রশাসনও নির্বিকার।
স্থানীয় বাসিন্দা আজিজ মোল্লা বলেন, “যে ভাবে দিনের পর দিন গাবতলা খালটি বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে, তাতে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়বে। চাষবাসও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না।”
ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আরাবুল ইসলাম বলেন, “ওই এলাকা থেকে এ বিষয়ে কিছু অভিযোগ পেয়েছি। বিডিও-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েছি। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যদি আমাদের দলের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাঁর বিরুদ্ধেও দলগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ওই ব্যবসায়ী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। উল্টে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের হুমকি দেন বলে অভিযোগ। ভাঙড় ২ বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, “এ রকম একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” ভাঙড় ২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক হিরন্ময় বসু বলেন, “এলাকায় জমা জল ও আবর্জনা থেকে মশা-মাছির উপদ্রব বাড়তে পারে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হবে।”
এ বিষয়ে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, “ওই এলাকায় তৃণমূলের মদতে জলাভূমি থেকে শুরু করে নিকাশি খাল রাতারাতি ভরাট করা হচ্ছে। ভাঙড়ের জমি মাফিয়ারা সরকারি জমি জবরদখল করে বিক্রি করে দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠি দিয়েছি। অবিলম্বে এই বেআইনি কাজ বন্ধ না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।”
ভাঙড় ২ ব্লকের বিএলআরও অমিতাভ সেনগুপ্ত বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। সে মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”