বাসন্তীর এই কলেজে গোলমালের অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।
কলেজের অধ্যক্ষকে হেনস্থা, প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল কলেজের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে বাসন্তীর সুকান্ত কলেজে। দুই কর্মী, সাইফুদ্দিন খান ও ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে সন্ধ্যায় থানায়
লিখিত অভিযোগ করেছেন অধ্যক্ষ ধ্রুবচরণ হোতা। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা বাসন্তীর ভাঙনখালিতে ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সুকান্ত কলেজ নির্মাণের জন্য এলাকার বহু মানুষ সহযোগিতা করেন। অনেকে জমি দিয়েছিলেন। বিনিময়ে অনেকে কলেজে চাকরি নিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের জন্য। কলেজ সূত্রের খবর, সে ভাবেই চাকরি পেয়েছিলেন সাইফুদ্দিন ও ফিরোজ। কলেজের গ্রুপ ডি পদে চাকরি করেন ফিরোজ। সম্পর্কে তাঁর কাকা সাইফুদ্দিন নিরাপত্তারক্ষী। অভিযোগ, কোনও দিনই তাঁরা সময়মতো কাজে আসেন না। অনুপস্থিতির হারও বেশি। নিজেদের ইচ্ছেমতো আসা-যাওয়া করলেও কলেজের রেজিস্টারে সই করেন।
অভিযুক্তদের আবার দাবি, তাঁরা কলেজের ভূমিদাতা। তাই তাঁদের সময় অনুযায়ী কলেজের কাজকর্ম চলা উচিত। এ সব কিছুরই প্রতিবাদ জানান অধ্যক্ষ। একাধিকবার সতর্ক করা হলেও কোনও কথায় কেউ কান দেননি বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় কলেজে এসে উপস্থিত হলেও রেজিস্টারে সকাল সাড়ে ১০টা লিখে সই করেন সাইফুদ্দিন। বিষয়টি জানতে পেরে অধ্যক্ষ তাঁকে ডেকে পাঠান। এ নিয়ে কৈফিয়ত চাইলে অধ্যক্ষকে গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ। হেনস্থাও করা হয়। ঘটনার সময়ে অধ্যক্ষের ঘরে উপস্থিত হন ফিরোজ। অভিযোগ, তিনি ধ্রুবচরণকে মারতে উদ্যত হন। হইচই শুনে আসেন শিক্ষক ও অন্য কর্মীরা। তাঁদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সামলানো হয়।
ধ্রুবচরণের কথায়, “কলেজে যে দিন থেকে যোগ দিয়েছি, সে দিন থেকেই দেখছি এই দু’জন কর্মী কোনও নিয়ম মানেন না। ইচ্ছেমতো কলেজে আসা-যাওয়া করেন। এর প্রতিবাদ করায় আমাকে হেনস্থা ও গালিগালাজ করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “ওঁরা কলেজ তৈরির জন্য জমি দিয়েছেন বলে যা ইচ্ছে তাই করেন। ওঁদের অত্যাচারেই আগের কয়েক জন অধ্যক্ষ কলেজ ছেড়েই চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে শুনেছি।”
অভিযোগ অস্বীকার করে সাইফুদ্দিন বলেন, “আমি হৃদরোগে আক্রান্ত। অধ্যক্ষ সব সময়ে আমার উপরে মানসিক অত্যাচার করেন। আমাকে বদনাম করার চেষ্টা করছেন। প্রতিবাদ করেছি বলে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।” ফিরোজ বলেন, “এই কলেজ তৈরির জন্য জমি দিয়েছি আমরা। কিন্তু কলেজে আমাদের কোনও সম্মান নেই। অধ্যক্ষ মিথ্যা অভিযোগ করছেন।”