ফেসবুক থেকে নেওয়া।
দিল্লি থেকে ফিরেই দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে একটি ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। এ বার আলো ও শব্দের খেলায় মন্দিরের ইতিহাস জানা যাবে মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়েই। মুখ্যমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন। পাশাপাশি, কিছু পরিবর্তনের পরামর্শও দেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘দক্ষিণেশ্বর এবং রানি রাসমণির ইতিহাস এখন আর শুধু বইয়ের পাতাতেই আবদ্ধ থাকবে না। ২৫ মিনিটের এই ভিডিয়োতেই দেখা যাবে যাবতীয় ইতিহাস।’’
২০১১-য় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন মন্দির-মসজিদ সংস্কারের কাজ করে আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। দক্ষিণেশ্বরে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে স্কাইওয়াক। এ বার আলো ও শব্দের খেলায় ইতিহাস জানার পালা। উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী সে কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘প্রত্যেকে প্রত্যেকের ভাগের কাজটি ঠিক মতো করলে, প্রকল্প সফল হয়। তার জ্বলন্ত উদাহরণ দক্ষিণেশ্বরের নবনির্মিত লাইট অ্যান্ড সাউন্ড।’’ একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথায় উঠে আসে বর্তমান পরিস্থিতিতে ধর্মকে রাজনীতির সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার প্রবণতার কথাও। তিনি বলেন, ‘‘ধর্ম নিয়ে উন্মত্ততা সাধারণ মানুষ করে না। আসলে দাঙ্গা করে কিছু লোভী নেতা। যাদের মাথাটা কালো নোংরায় ভর্তি। আমরা তাই বলি, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’’
দক্ষিণেশ্বরকে আন্তর্জাতিক মানের একটি সংস্কৃতি ও পর্যটনস্থল হিসেবে চিহ্নিত করে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, আগামী দিনে মন্দির চত্বরে হেলিপ্যাডের ব্যবস্থাও করে দেবে সরকার। মন্দির চত্বরে একটি অতিথিশালা সাজিয়ে দেওয়ার জন্য ১০ কোটি টাকা দেওয়া হবে বলেও জানান মমতা। দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির ও দেবোত্তর এস্টেটের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরীর নামোল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘কুশলদের আমি বলেছিলাম, মায়ের কিছু দরকার হলে আমাকে বলবে। আমি যতটা পারি করবই। কারও কাছে ভিক্ষা চাইবে না। মায়ের জন্য কারও কাছে হাত পাতার দরকার নেই।’’
রাসমণি থেকে রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ যে চিরন্তন মানবতার কথা শুনিয়েছেন, তাতে ধর্ম নিয়ে হানাহানির কোনও স্থান নেই। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘‘সবাইকে বলছি, এঁদের লেখা বইপত্র একটু পড়ে দেখুন।’’ এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অনেকে বলে আমি নাকি নমাজ পড়ি। না, পড়ি না। তবে আমি ইফতারে যাই। কই, দুর্গাপুজোয় গেলে তো এই প্রশ্ন ওঠে না।’’