কাঁচরাপাড়ার কলেজে গোলমাল

নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল-বিজেপি দু’পক্ষই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২৭
Share:

প্রতিবাদ: ধিক্কার মিছিল বের করল তৃণমূল। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে রাজনৈতিক গোলমাল চলছেই। রবিবার শুরু হওয়া তৃণমূল-বিজেপি গোলমাল অব্যাহত বুধবারও।

Advertisement

বুধবার ব্যানার লাগানোকে কেন্দ্র করে কাঁচরাপাড়া কলেজে তৃণমূল এবং বিজেপির ছাত্র সংগঠনের মধ্যে গোলমাল বাধে। পলতায় টিএমসিপির এক নেতাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগের তির বিজেপির দিকে। হালিশহরে বিজেপির এক নেতার বাড়ির সামনে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল-বিজেপি দু’পক্ষই। রবিবার শ্যামনগরে পার্টি অফিস দখলকে কেন্দ্র করে গোলমালের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার ওই এলাকায় মিছিল করে তৃণমূল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় বেহাত হওয়া পার্টি অফিসগুলি ফের দখলে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। তার ফলে ব্যারাকপুরের বেশ কিছু এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। ব্যারাকপুরের কমিশনারেটের পুলিশ জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।

Advertisement

পলতার শান্তিনগরের বাসিন্দা, টিএমসিপি নেতা দিব্যেন্দু বিশ্বাস মঙ্গলবার রাত ১১টা নাগাদ কাকার স্কুটারে করে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর অভিযোগ, বাড়ির কাছাকাছি এলাকায় তাঁদের স্কুটার আটকায় কয়েক জন যুবক। তারা বিজেপির লোক বলে অভিযোগ দিব্যেন্দুর।

তাঁর অভিযোগ, স্কুটার থেকে নামিয়ে তাঁকে মারধর করে। তাঁকে বাঁচাতে গেলে মারধর করা হয় তাঁর কাকাকেও। এলাকার বাসিন্দারা এলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। ফোন পেয়ে টিটাগড় থানার পুলিশ এসে জখম অবস্থায় দিব্যেন্দুকে উদ্ধার করে। বিএন বসু হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। টিটাগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন দিব্যেন্দু। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে।

এলাকার বিজেপি নেতা গৌর বিশ্বাস তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা তৃণমূলের নিজেদের গোলমালের ফল। এর সঙ্গে আমাদের দলের সম্পর্ক নেই।’’

হালিশহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের গুলি চালনার ঘটনাও সোমবার রাতের। স্থানীয় বিজেপি নেতা বিপুল সিংহের জানান, বাইরের চিৎকার-চেঁচামেচিতে মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায়। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ির বাইরে বেরিয়ে দেখতে যাওয়ার সময়ে দাদা এবং বাড়ির অন্যেরা আটকে দেয়। তারপরেই পর পর গুলির শব্দ শোনা যায়। বাকি রাত না ঘুমিয়েই ভয়ে ভয়ে কেটেছে আমাদের।’’

বিপুল জানান, বুধবার সকালে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে তাঁরা দেখেন, চার-পাঁচটি গুলির খোল পড়ে রয়েছে। বীজপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এলেও তাঁদের অভিযোগকে তেমন আমল দিচ্ছে না বলে অভিযোগ বিপুলের। তিনি বলেন, ‘‘গত দু’মাস ধরে তৃণমূলের লোকেরা আমাকে ফোনে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমি এর আগেও থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু অভিযোগপত্র ত্রুটিপূর্ণ বলে তা বারবার ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। ফোনে হুমকি কলের রেকর্ডিংও দিয়েছি পুলিশকে। কিন্তু তারা কিছু করেনি।’’ পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ মানছে না।

নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘আদৌ যদি কিছু ঘটে থাকে, তা বিজেপির নিজেদের গোলমালের ফল। আমাদের লোকেরা এর সঙ্গে কোনও ভাবে জড়িত নয়। আসলে বিজেপি থেকে সকলেই তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন বলে আতঙ্কতি বিজেপি এই ধরনের ভুয়ো অভিযোগ করছে।’’

বুধবার টিএমসিপি এবং এবিভিপির গোলমালে উত্তেজনা ছড়ায় কাঁচরাপাড়া কলেজে। অভিযোগ এবিভিপির সদস্যেরা টিএমসিপির লাগানো ব্যানার খুলে দেয় বলে অভিযোগ। পাল্টা টিএমসিপির সদস্যেরাও এবিভিপির ব্যানার খুলে দেয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের বচসা, ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আতঙ্ক ছড়ায় কলেজে। পুলিশ এসে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement